ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

মেয়াদোত্তীর্ণ ১১ বিলিয়ন ডলার ঋণ গলার কাঁটা

শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০১:৫৬ পিএম

মেয়াদোত্তীর্ণ ১১ বিলিয়ন ডলার ঋণ গলার কাঁটা

ছবি: সংগৃহীত

  • ডলার সংকট নিরসন বাস্তবতা দৃশ্যমান নয়
  • সরকারের শীর্ষ ২০ প্রতিষ্ঠানের মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ১১ বিলিয়ন ডলার
  • ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ বিলম্বে পরিশোধে জরিমানা হবে
  • বিলম্বে বকেয়া পরিশোধে বিদেশি ব্যাংকগুলোর আস্থা হারাবে

দেশের চলমান ডলার সংকট ক্রমান্বয়ে কমছে। পরিবর্তিত অন্তর্বর্তী সরকারের কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই দাবি করছে। তবে ডলার সংকট নিরসনের বাস্তবতা এখনো দৃশ্যমান নয়। কারণ দেশের ব্যাংকগুলোর কাছে প্রয়োজনীয় ডলার নেই।

দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল বা পণ্য আমদানিতে খোলা ঋণপত্রের (এলসি) বিল পরিশোধে পর্যাপ্ত ডলার নেই। তবে বিগত সরকারের সময়ে করা আমদানি বিল এখনো গলার কাঁটা হিসাবে রয়েছেÑ এমনই দাবি করছেন অনেক ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর শীর্ষ কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সরকারের শীর্ষ ২০ প্রতিষ্ঠানের বিদেশি এলসির মেয়াদোত্তীর্ণ আমদানি বিলের দায় দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৩৬ কোটি (১১ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন) ডলার। আর বেসরকারি খাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের দায় দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ মিলিয়ন বা ৭ কোটি ডলার। তারমধ্যে সর্বোচ্চ দায় নিয়ে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি)। প্রতিষ্ঠানটির দায়ের পরিমাণ ৯৩৬ কোটি বা (৯ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন) ডলার। 

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এলসির দায় ৫২ কোটি ডলার। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশনের (পেট্রোবাংলা) ৪৪ কোটি ডলার। ডিরেক্টর জেনারেল ডিফেন্স পারচেজের (ডিজিডিপি) প্রায় ৩৪ কোটি ডলার। নৌবাহিনীর ২৯ কোটি ডলার। এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রায় ১২ কোটি ডলার, কমান্ডেন্ট বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরিজের ৯ কোটি ডলারের বেশি, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ৪ কোটি ডলারের বেশ।

রাজধানীর একজন আমদানিকারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এখনো আমদানি বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছি। ডলারের দাম কমানোর কোনো চিহ্ন নেই। বাস্তবে ডলারের দাম কমছে, তা ঠিক নয়। তবে আগের চেয়ে এলসি খোলা কমায় কিছু ডলার কম খরচ হচ্ছে। এজন্য ডলার নিয়ে দৌঁড়ঝাপ কমেছে বলা যায়। সূত্র জানায়, দেশের ডলার সংকট তীব্র হচ্ছে। বিশেষ করে, বিগত সরকারের আমলের দায়গুলো এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে দায়ের ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা দরকার। তা না হলে বাড়তি সুদ দিতে হবে। পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে বকেয়ার জন্য বাড়তি অর্থ চার্জ করবে হবে। আর একেবারে বেশি বিলম্ব হলে একটা পর্যায়ে পরবর্তীতে বাংলাদেশের এলসি খোলার জন্য বিমুখ হবে বিদেশি অনেক ব্যাংক। আর খুলতে চাইলেও ঝুঁকি বিবেচনায় বাড়তি কমিশন দিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক হুসনে আরা শিখা রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, চলতি অর্থবছরে ১০ বিলিয়ন ডলার এলসি খোলা হয়েছে। যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১২ বিলিয়ন ডলার। এর সময় আমদানির পরিমাণ কমেনি। বরং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিংয়ের কারণ এলসির দায় কমেছে এবং এতে ডলার সাশ্রয় হচ্ছে। এজন্য আগের মতো ডলার সংকট নেই। দিন দিন প্রশমিত হচ্ছে। এজন্য ডলার কেনাবেচা বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর ব্যাংকের খোলাবাজারের রেট বেশি মাত্র ১ টাকা।

আরবি/জেআই

Link copied!