ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
হাসিনাকে দিয়েছেন ‘কওমি জননী’ উপাধি

বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিন এখন গোপালগঞ্জে

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪, ০৮:০১ পিএম

বায়তুল মোকাররমের খতিব রুহুল আমিন এখন গোপালগঞ্জে

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

২০১৮ সালের নির্বাচনে নড়াইল-১ আসন থেকে নৌকা প্রতীকে সংসদ সদস্য (এমপি) হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে খতিব মুফতি মাওলানা রুহুল আমিন। তবে সংসদে যাওয়ার ইচ্ছা পূরণ না হলেও ২০২২ সালের ৩১ মার্চ পেয়ে যান জাতীয় মসজিদের খতিব পদ।

তবে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হলে গত ২৬ জুলাইয়ের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আর আসেননি এমপি হতে চাওয়া খতিব মুফতি রুহুল আমিন।

খতিবের দায়িত্ব পালনে না আসায় গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজে ইমামতির জন্য দু’জন সরকারি কর্মকর্তাসহ চারজনকে দায়িত্ব দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

মুফতি রহুল আমিন গোপালগঞ্জে রয়েছেন বলে জানা গেছে। তিনি সেখানকার গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালকও। গত ১৫ দিনে কয়েক দফা চেষ্টা করেও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরে মাদ্রাসার শিক্ষক ও খতিবের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মুফতি মুহাম্মদ তাসনীম বলেছেন, খতিব অসুস্থ। তিনি পরিপূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘কওমি জননী’ উপাধিতে ভূষিত করেছিলেন এই মুফতি রুহুল আমিন। ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শোকরানা মাহফিল থেকে শেখ হাসিনাকে তিনি এই উপাধি দেন। এসময় তিনি কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড গওহরডাঙ্গার চেয়ারম্যান ও গোপালগঞ্জের গওহরডাঙ্গা মাদ্রাসার মহাপরিচালক ছিলেন।

এদিকে, গত ২৬ জুলাইয়ের পর কর্মস্থলে অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে গত ২৯ আগস্ট তাঁকে নোটিশ দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা জানতে ৭ দিন সময় দেওয়া হয় নোটিশে। এই সময় গত ৫ সেপ্টেম্বর শেষ হয়েছে। কিন্তু খতিবের দিক থেকে জবাব আসেনি। গতকাল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজে তিনি আসেননি।

তাঁর অনুপস্থিতিতে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গবেষণা বিভাগের মুফতি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ, হালাল সনদ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. আবু সালেহ পাটোয়ারী, মসজিদের নিয়মিত সিনিয়র পেশ ইমাম মাওলানা মিজানুর রহমান ও পেশ ইমাম মাওলানা এহসানুল হককে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

তবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে নিরীক্ষায় মিজানুর রহমান ও এহসানুল হকের বিরুদ্ধে জাল সনদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। তাদের চাকরিচ্যুত করার সুপারিশ করা হয়েছিল। তবে পরবর্তী সময়ে নিরীক্ষা নিষ্পত্তি হয়েছে। এ নিষ্পত্তি নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। গত বছরের ১৭ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে তাদের সনদ ও নিয়োগের অনিয়ম তুলে ধরা হয়। তাদের নিয়োগের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট বিচারাধীন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্তেও অনিয়মের তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে গত ১৬ জুলাই গবেষণা বিভাগের কর্মকর্তা ড. ওয়ালীয়ুর রহমানকে জুমায় ইমামতি করার অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছিল সরকার। কিন্তু তিনি নিজেকে ভারপ্রাপ্ত খতিব দাবি করছেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ পরিস্থিতিতে ৩০ আগস্ট বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানায় কাউকে ভারপ্রাপ্ত খতিব নিয়োগ করা হয়নি। এরপর অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে।

আরবি/ এইচএম

Link copied!