ঢাকা: বাংলাদেশ শান্তিতে না থাকলে দিল্লিকেও শান্তিতে থাকতে দেব না বলে হুশিয়ার দিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।
তিনি বলেন, হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে ভারত আশ্রয় দিয়েছে, তারা নানা ষড়যন্ত্র করছেন। এদেশে ভারতের সেনাবাহিনী ঢোকার চেষ্টা করলে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী প্রতিহত করবে। বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষ একেকজন সৈনিক। অতএব হুমকি দিয়ে কাজ হবে না।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে `আন্তর্জাতিক গনতন্ত্র দিবস` উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশ থেকে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে ভার্চুয়ালি বক্তব্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং সভাপতিত্ব করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপি প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য অধ্যাপক ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, আব্দুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) সাইদুল ইসলাম বাবুল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুণ রায় চৌধুরী, যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জারিফ তুহিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক হোসেন খান, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির প্রমুখ।
হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, আমরা শেখ হাসিনাকে বহুবার বলেছি কেয়ারটেকার সরকার দেন। আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বহুবার বলেছেন। কিন্তু তিনি আমাদের কথা শোনেননি। তিনি দাদাদের কথা শুনলেন। আমাদের কথা শুনলে এভাবে পালিয়ে যেতে হতো না। এখন বলে তিনি নাকি চট করে ঢুকে যাবেন? আসেন না! বিএনপির নেতাকর্মীরা গত ১৫/১৬ বছরে পুরনো জুতা একটাও ফেলে দেয়নি। সবগুলো উপহার দিতে চাই।
তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের বলছিলেন শেখ হাসিনা পালায় না, মুজিব কন্যা পালায় না। কোথায় কাদের? দলের সকল নেতাকর্মীদের ফেলে পালালেন। যেন চাচা আপন প্রাণ বাঁচা। শেখ হাসিনা এই দৌড় অলিম্পিকে দিলে তিনি সোনার মেডেল পেতেন। এখন বলছেন চট করে নাকি ঢোকে যাবেন। আসেন না? গত ১৫ বছরের বিএনপির শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা গুম করেছেন। শত শত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। পিলখানায় ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করেছে।
মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু বলেন, এক মাসের আন্দোলন নয়, বরং ১৬ বছরের গুম খুন নির্যাতনের শেষ পরিণত হয়েছে শেখ হাসিনার পতন। এখনো খুনী শেখ হাসিনার পেত্মাতা দালালরা ষড়যন্ত্র করছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে হবে। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে গনতন্ত্রকে সুসংহত করতে হবে।
যুব দলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না বলেন, শেখ মুজিব ৭৫ সাল একদলীয় বাকশাল গঠন করেছিল। সেখান থেকে গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার করে বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। পরবর্তীতে ৯১ সালে স্বৈরাচার সরকার এরশাদের পতন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে আবার গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেন বেগম খালেদা জিয়া। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আবারও একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করার চেষ্টা চাালয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতৃত্বে ১৫ বছর লড়াই সংগ্রাম করে আবারো গনতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছেন। কিন্তু আমাদের আন্দোলন এখনো শেষ হয়ে যায়নি। তারেক রহমানে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
দুপুর আড়াইটায় ওলামা দলের আহ্বায়ক কাজী মো. সেলিম রেজার কোরাআন তেলাওয়াত পরিচালনায় মাধ্যমে সমাবেশে শুরু হয়। এর আগে দুপুর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে যোগ দেন অঙ্গ ও সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। নয়াপল্টন ও এর আশাপাশের এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। স্লোগানের স্লোগানে পুরো এলাকা প্রকম্পিত করে তোলেন নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, পুরানা পল্টন, কাকরাইল এলাকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশে ঢাকার বাইরে থেকে গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল নেতাকর্মীরাও নিয়ে মিছিল যোগ দেয়। জাতীয়বাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতাকর্মীরা গান ও নৃত্য পরিদর্শন করেন।
আপনার মতামত লিখুন :