ঢাকা সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ

ভাড়াও দিচ্ছে না, কার্যালয়ও ছাড়ছে না রাজশাহী বিএনপি!

মাহাবুল ইসলাম, রাজশাহী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৪, ০৯:২৫ পিএম

ভাড়াও দিচ্ছে না, কার্যালয়ও ছাড়ছে না রাজশাহী বিএনপি!

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহী জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয়ের ভাড়া বাকি আছে প্রায় দুই লাখ ৮৮ হাজার টাকা। ভবনের মালিকরা উকিল নোটিশ পাঠালেও কার্যালয় ছাড়ছেন না বিএনপি নেতারা, আবার বকেয়া ভাড়াও পরিশোধ করছেন না। এ নিয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) কমিশনারের কাছেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র মালোপাড়ায় অবস্থিত এই ভবন। এর ঠিক সামনেই ভুবনমোহন পার্ক অবস্থিত। ভবনটির নাম কাবিল ম্যানশন। ভবনটি চারতলা। এর দ্বিতীয় তলায় ৮০০ বর্গফুটের দুটি কক্ষ নিয়ে রাজশাহী মহানগর বিএনপির কার্যালয় অবস্থিত। ২০২১ সালের ১ আগস্ট থেকে মাসিক ১২ হাজার টাকার চুক্তিতে ভাড়া নেন বিএনপি নেতারা। চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট। চুক্তিবিহীন আরও দুই বছর কাটিয়ে দিয়েছেন তারা।

এখান থেকে বিএনপির কার্যালয় সরাতে গত ১৭ মে আরএমপি কমিশনারের কাছে আবেদন করেন মালিকরা। কিন্তু এরপরও কোন প্রতিকার পান নি।

ভবনের মালিক আট জন। তারা সম্পর্কে ভাইবোন। এতদিন ভবনটির সবকিছু দেখভাল করতেন ভাইবোনদের সবচেয়ে বড় আবদুল ওহাব। সম্প্রতি তিনি মারা গেছেন। এরপর থেকে প্রবাসে থাকা তার ভাই শামস আলম দেখভাল করছেন।

তিনি বলেন, বিএনপির আগের সাইনবোর্ডটি ছোট ছিল। এবার ওঠার সময় তারা বড় সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। এখানে এই ভবন ভেঙে বহুতল ভবন করা হবে। বাধ্য হয়ে তারা ঘর ভাঙা স্থগিত রেখেছে। তাদের সমস্যার কথা বারবার রাজশাহী মহানগর বিএনপি আহ্বায়ককে বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করছেন না। এর মধ্যে কক্ষ দুটি‍‍`র বকেয়া ভাড়া বেড়ে দুই লাখ ৮৮ হাজার টাকা হয়েছে।

পুলিশ কমিশনারের কাছে আবেদন সূত্রে জানা গেছে, কক্ষ দুটি ভাড়া নেওয়ার সময় বিএনপির নেতারা ব্যক্তিগত কার্যালয় করার জন্য ভাড়া নিয়েছিলেন। কিন্তু দলীয় কার্যালয় হিসেবে অবৈধ ও জবরদস্তিভাবে ব্যবহার করে আসছে। ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগও আনে বাড়ির মালিকপক্ষ। তাদের দাবি, বিএনপির দলীয় কার্যক্রমের কারণে ওই আবাসিক ভবনের অংশীদাররা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

আবেদনে আরও বলা হয়, কাবিল ম্যানশনটি ১৯৬৪ সালের তৈরি। ফলে এটি অত্যন্ত পুরোনো ও জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। সব অংশীদার একমত হয়ে ভবনটি ভেঙে ফেলে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একটি ডেভেলপার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে। ২০২২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিএনপির দখলে থাকা ভবনের কক্ষ দুটি খালি করার জন্য ডাকযোগে লিখিত নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু কক্ষ খালি না করায় ডেভেলপার প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হতে অপারগতা প্রকাশ করে।

আবেদনে আরও বলা হয়েছে, চুক্তিপত্রে বিদ্যুৎ বিল নিয়মিত পরিশোধ করার শর্ত থাকলেও বিএনপির নেতারা লক্ষাধিক টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রেখেছেন।

মালিকপক্ষ জানায়, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ইশা ও অন্যদের ঘর দুটি খালি করার জন্য অনেকবার মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। বিএনপির নেতারা কথা দিয়েও ভবন ছাড়েননি। সবসময় বিভিন্ন অজুহাত, টালবাহানা করে কালক্ষেপণ করে আসছেন।

ভবনের অংশীদারেরা জানান, উকিল নোটিশে সাত দিনের মধ্যে বিএনপি নেতাদের বকেয়া পাওনাসহ কক্ষ দুটি ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। সরকার পরিবর্তনের কিছুদিন আগে বকেয়া ভাড়া না দিয়েই তারা ঘর ছেড়ে দেন। এরপর বাড়ির মালিক তখন নতুন করে বাড়ি নির্মাণের জন্য কাবিল ম্যানশন ভাঙতে শুরু করেন। এর মধ্যে সরকার পরিবর্তন হলে বিএনপির নেতারা আবার এসে ওই ভবনের দুই কক্ষ দখল নেন।

এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশাকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।

আরবি/ এইচএম

Link copied!