গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ যেন প্রায় নিষ্ক্রিয়। ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছেন দলের নেতাকর্মীরা। হচ্ছেন গ্রেপ্তারও। তবে দলটির বেশ কিছু শীর্ষ নেতা এখনও ধরা পড়েননি। তারা কোথায় আছেন সে বিষয়েও সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এদের মধ্যে অন্যতম হলেন- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক পাটমন্ত্রী ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক। তবে আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ দুই নেতার বিষয়ে তথ্য পেলেই তাদের গ্রেপ্তার করা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।
রোববার (৬ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস এ কথা জানান।
জানা গেছে, পট পরিবর্তনের পর থেকে ইতোমধ্যেই অনেক হেভিওয়েটকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। কিন্তু এখন পর্যন্ত ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানকের মতো বিতর্কিতদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তাদের গ্রেপ্তারের অগ্রগতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাদের বিষয়ে আমাদের কাজ চলছে। তথ্য পেলেই গ্রেপ্তার করা হবে।
তবে শুধুমাত্র যে আওয়ামী লীগের নেতারাই র্যাবের তালিকায় রয়েছেন এমনটি নয়, বরং ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলাসহ নানা অভিযোগে অভিযুক্ত প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদেরও খুঁজছে র্যাব। যে তালিকায় রয়েছেন, সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশিদও।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে র্যাবের ভূমিকা জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫ আগস্ট পরে এখন পর্যন্ত র্যাব এক হাজার ৭০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এরমধ্যে বিগত সরকারের উচ্চপর্যায়ের ৩৯ জন। পাশাপাশি অস্ত্রহাতে ছাত্র-জনতার ওপর গুলির ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
র্যাব নেতৃত্বস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায়ের অনেককেই গ্রেপ্তার করেছে। এছাড়া বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। কেউ যদি কোনো তথ্য পান তাহলে র্যাবকে দিলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। র্যাব সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে আছে।
পুলিশের ৯০ জনের বেশি কর্মকর্তা এজাহারভুক্ত আসামি। র্যাবের কোনো সদস্যকে আসামি করা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস বলেন, র্যাবের কোনো সদস্য পালিয়ে যায়নি। অন্যান্য বাহিনীতে হলেও র্যাবের কোনো সদস্য কর্মবিরতিতে যায়নি।
তিনি বলেন, আটটি বাহিনী থেকে র্যাবে সদস্য আসে। র্যাবের ১০ হাজার সদস্যের মধ্যে প্রায় ৪৪ শতাংশ পুলিশ বাহিনী থেকে আসে। কিন্তু র্যাবে কোনো সমস্যা ছিল না। ছাত্র-জনতার ওপর র্যাব কখনোই মারণাস্ত্র-গুলি ব্যবহার করেনি। র্যাব ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সঙ্গে ছিল এবং অভ্যুত্থান সফল করতে কাজ করে যাচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :