ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর, ২০২৪

‘নারী কর্তৃক নারী ধর্ষণ’ কেও ধর্ষণ হিসেবে আইনি স্বীকৃতি চাই

রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৪, ১১:৫৭ পিএম

‘নারী কর্তৃক নারী ধর্ষণ’ কেও ধর্ষণ হিসেবে আইনি স্বীকৃতি চাই

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: যশোরের বাঘারপাড়ায় ৬ বছরের শিশু তাসনিয়াকে হত্যা ও ধর্ষণকারী ঈশিতা আক্তার ঋতুর ফাঁসি, এবং "নারী কর্তৃক নারী ধর্ষণ" কেও ধর্ষণ হিসেবে আইনি স্বীকৃতি দিতে আইনে ধর্ষকের লিঙ্গনিরপেক্ষ সংজ্ঞায়ন চেয়ে উচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন।

উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে এইড ফর মেনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম বলেন, আমরা দেশটিভি, যুগান্তর, জাগো নিউজ সহ বেশকিছু গণমাধ্যম মারফত জানতে পারি যে, যশোরের বাঘারপাড়ায়  ঈশিতা আক্তার ঋতু নামের এক নারী তার বিকৃত যৌন লালসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে তাসনিয়া নামের এক মেয়েশিশুকে নিজের রুমে ডেকে নিয়ে প্রথমে মোবাইলে অস্লীল ভিডিও দেখায়, অতঃপর তাকে বিবস্ত্র করে তার সাথে বিকৃত যৌনকর্মে লিপ্ত হয়। ভুক্তভোগী মেয়েটি যৌনাঙ্গে ব্যাথা পেয়ে চিৎকার করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে যায়। তখন তাকে শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

ফরেনসিক পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত তথা ভিক্টিমের যোনির ভিতরে ক্ষত পাওয়া যায়, যার মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে প্রমানিত হয় যে পেনিট্রেশন হয়েছে। প্রথমে পুলিশের কাছে, এবং পরবর্তীতে গণমাধ্যমের কাছে "ধর্ষক"  ঈশিতা আক্তার ঋতু নিজেও তার অপরাধ স্বীকার করেছেন।

অথচ দুঃখজনক হলেও সত্যি যে, ধর্ষণের অনুরূপ নৃশংস যৌন সহিংসতা হওয়া সত্বেও, আমরা দেখছি যে, ঘটনাটি সামাজিকভাবে এবং আইনগতভাবে "ধর্ষণ"  হিসেবে স্বীকৃতি পাচ্ছে না। বাংলাদেশের আইনে ধর্ষণের সংজ্ঞায় সুস্পষ্ট লিঙ্গবৈষম্য রয়েছে।

সংগঠনটির ঢাকা জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক ইয়াসির আরাফাত বলেন, এই "ধর্ষণকান্ড" নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে যশোর জেলার বর্তমান দায়িত্বরত এসপি রেশমা শারমিনকে সরাসরি "ধর্ষণ" শব্দটি না বলে এভাবে বলতে শোনা গেছে যে,
মেয়েটি ঈশিতা আক্তার ঋতু নামের ওই নারীর বিকৃত যৌন লালসার শিকার হয়ে প্রাণ হারিয়েছে। দুই একটি গণমাধ্যমে সরাসরি "ধর্ষণ" লিখলেও অধিকাংশ গণমাধ্যমে "ধর্ষণ" না লিখে ধর্ষণের বিকল্প শব্দ হিসেবে "বিকৃত যৌনাচার", "যৌন অত্যাচার", ইত্যাদি লঘু শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে। যার মাধ্যমে ধর্ষণের মত একটা গুরুতর অপরাধকেও হালকা করে ফেলা হচ্ছে।  

উক্ত বিক্ষোভ সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, এবং এইড ফর মেনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খালিদ মাহমুদ তন্ময় বলেন, বাংলাদেশে
"নারী কর্তৃক নারী ধর্ষণ"কে আইনগতভাবে "ধর্ষণ" হিসেবে স্বীকার না করায় এই ধরণের ঘটনায় ধর্ষিতারা ন্যায়বিচার পাচ্ছে না। অনেক ভুক্তভোগী আছে যারা ন্যায়বিচার পাবে না ভেবে আইনের আশ্রয় নিতে আসছে না। ফলে এই ধরণের ধর্ষণের ঘটনাগুলো আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। তাই "নারী কর্তৃক নারী ধর্ষণ" কে আইনগতভাবে "ধর্ষণ" হিসেবে স্বীকৃতি দিতে, উন্নত বিশ্বের দেশগুলোর মত বাংলাদেশেও ধর্ষকের লিঙ্গনিরপেক্ষ সংজ্ঞায়ন চাই।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!