আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত সচিব-উপসচিব ও কর্মকর্তাদের বহিষ্কার এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্তদের চুক্তি বাতিলসহ ৬ দফা দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্য (এএফসি) নামের একটি অরাজনৈতিক সংগঠন।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।
সমাবেশে সাম্প্রতিক অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয় ভূমিকা, গণহত্যায় জড়িত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও লীগ সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় না আনা, আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাদের সেফ এক্সিট দেয়া এবং সহিংসতায় সহযোগী রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিদের জবাবদিহি করতে সরকারের ব্যর্থতার প্রতিবাদ করা হয়।
কর্মসূচিতে বিশিষ্ট লেখক মোহাম্মদ ইসরাক আজিজ ফাহিম বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে আন্দোলনকারী ছাত্র জনতাকে যেন গ্রেপ্তার না করা হয়। এটা প্রজ্ঞাপন আকারে আসা উচিত। আগস্টের শুরুতে পুলিশের সাথে সংঘর্ষের মামলায় এখন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে যা এই আন্দোলনের স্পিরিটের পরিপন্থী।
তিনি বলেন, ফ্যাসিস্টদের বসানো রাষ্টপতিকে এখনো অপসারণ করা হয়নি। যখন কোন ফ্যাসিবাদের দোসরকে গ্রেপ্তার বা বিচারের আওতায় আনা হয় তখন তার নানান পরিচয় বের হয়, কেউ ভালো ক্রিকেটার, নাট্যকার, ভালো আবৃতি করে ইত্যাদি।
তিনি আরও বলেন, কয়টা সেঞ্চুরি করলে একটা আবু সাইদ ফিরে পাওয়া যাবে? তিনি বিভিন্ন কৌশলে ফ্যাসিবাদকে নরমালাইজ করার বিষয়টি বন্ধ করার আহ্বান জানান সরকারকে।
ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যের আইন ও শৃঙ্খলা বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত জাকারিয়া বলেন, ছাত্র জনতার রক্তের বিনিময়ে এই বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু এখন দেখতে পাচ্ছি পুলিশ পুরনো ফ্যাসিবাদকে ফেরানোর চেষ্টা করছে। মব জাস্টিসকে বৈধতা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, পুলিশের ড্রেসটা এখন মানুষের কাছে আতংকের হয়ে উঠেছে। দেশে শৃঙ্খলা আনতে পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থা আনতে হবে এবং পুলিশকে সংস্কার করতে হবে।
এসময় ফ্যাসিবাদবিরোধী ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক রাফিদ ভুঁইয়া ৬টি দাবি উত্থাপন করেন:
পুলিশের সংস্কার করা, প্রয়োজনে নাম ও ড্রেসকোড পরিবর্তন করে লোগো থেকে নৌকার ছবি সরানো; আন্দোলনকালে যেসব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আক্রমণের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত বিচারের আওতায় আনা; আওয়ামী আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত সচিব সহ বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বহিষ্কার ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা; আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে; গত ১৫ বছরের সরকারি নিয়োগ পুনঃনিরীক্ষণ করতে হবে; আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনকে নিষিদ্ধ করে নেতৃবৃন্দকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আপনার মতামত লিখুন :