ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে গণজমায়েত

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৪:৫১ পিএম

রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে গণজমায়েত

ছবি: সংগৃহীত

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের অপসারণ ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধের দাবিসহ চার দফা দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে গণজমায়েত কর্মসূচি পালন করেছে শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই গণজমায়েত শুরু হয়।

এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম রাষ্ট্রপতিকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন। একই সঙ্গে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিও জানান তিনি। 

জমায়েতে অংশ নেওয়া বক্তারা দাবি করেন, রাষ্ট্রপতি স্ববিরোধী বক্তব্য দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি যে দ্বিমুখী বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে স্পষ্ট যে তিনি শেখ হাসিনাকে বৈধতা দিতে চান। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন রাষ্ট্রপতির এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছে বলেও উল্লেখ করেন তারা। 

সম্প্রতি মানবজমিনের প্রকাশনা জনতার চোখের প্রচ্ছদ প্রতিবেদনে -নেপথ্যের গল্পতে প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রপতি তাকে জানিয়েছেন, তিনি শুনেছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, কিন্তু তার কাছে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। কথোপকথনটি একটি রাজনৈতিক ম্যাগাজিন ‘জনতার চোখ’—এ প্রকাশিত হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে গত সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল দাবি করেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মিথ্যাচার করেছেন। 

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে বলেছিলেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন এবং তিনি সেটা গ্রহণ করেছেন। এখন আড়াই মাস পর বলছেন, তাঁর কাছে শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নেই। এমন কথা বলা স্ববিরোধিতা।’ 

আসিফ নজরুল দাবি করেন, ‘তিনি (রাষ্ট্রপতি) মিথ্যাচার করেছেন, যা শপথ ভঙ্গের শামিল। তাঁর বক্তব্যে অটল থাকলে তিনি পদে থাকতে পারেন কিনা তা উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আলোচিত হতে পারে।’

অবশ্য সমালোচনা ওঠার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়। রাষ্ট্রপতিকে উদ্ধৃত করে সোমবার বঙ্গভবনের পাঠানো এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘ছাত্র-জনতার গণবিপ্লবের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ ও দেশত্যাগ, সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংবিধানিক বৈধতার উপর যত ধরনের প্রশ্ন জনমনে উদ্রেক হয়েছে সেগুলোর যাবতীয় উত্তর স্পেশাল রেফারেন্স নং-০১/২০২৪ এ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গত ৮ আগস্টের আদেশে প্রতিফলিত হয়েছে।’

রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎকার নেওয়া মানবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরীও বলছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগপত্র নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন অসত্য কথা বলেননি। গত সোমবার রাতে তিনি বলেন, ‘আসল ঘটনাটা কি সেটা জানার চেষ্টা করেছি আমি, অনেকদিন। তারপর প্রেসিডেন্ট (রাষ্ট্রপতি) সাহেবের সাথে কথা বলেছি। প্রেসিডেন্ট সাহেব যা সত্য তাই বলেছেন। এখানে ষড়যন্ত্রেরও কিছু নেই আর প্রেসিডেন্ট অসত্য কথা বলেছেন বলেও তো আমার মনে হয় না। তিনি তো পরিষ্কার বলেছেন, বিষয়টি মীমাংসা হয়ে গেছে। ওই রিপোর্টেও কিন্তু তিনি নিজেই বলেছেন যে, এটা মীমাংসা হয়ে গেছে। সেটাও ছাপা হয়েছে।’

পদত্যাগপত্রের ইস্যু অন্তর্বর্তী সরকারই মীমাংসা করতে পারে জানিয়ে মতিউর রহমান বলেন, ‘যারা সরকারে আছেন তারাই তো এটার মীমাংসা করতে পারেন। তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) কাছে যদি দালিলিক প্রমাণ থাকে, তাহলে তারা সেটা সামনে আনতে পারেন। আমার ফাইন্ডিংস হচ্ছে দালিলিক কোনো প্রমাণ নেই। মহামান্য রাষ্ট্রপতি এটা আমাকে বলেছেন, তার কাছে যায়নি (পদত্যাগপত্র)। কিন্তু উনি তো এটা বলেন নি যে পদত্যাগ অবৈধ, এটা ঠিক না। বঙ্গভবন থেকে যে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে মীমাংসিত ইস্যু নিয়ে বিতর্কের কিছু নেই। উনি যথার্থই বলেছেন।’

আরবি/এফআই

Link copied!