আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ভেতরে দলীয় কর্মীদের নিয়ে প্রবেশ করতে না পেরে চিফ প্রসিকিউটরের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে গোপন বৈঠকের অভিযোগ তুলেছেন গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর। আর তার এই আচরণকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ হিসেবে দেখছে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানার পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের একাংশের সভাপতি নুরুল হক নুর তার একদল সহযোগী ও বহিরাগত ব্যক্তিদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে উসকানিমূলক ও মানহানিকর স্লোগান দিতে দিতে একটি মিছিল নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মূল প্রবেশ গেট দিয়ে জোরপূর্বক প্রবেশের চেষ্টা করেন।
পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধার মুখে ট্রাইব্যুনালে ঢুকতে না পেরে নুরুল হক নুর তার দলীয় কর্মীদের নিয়ে ট্রাইব্যুনালের গেটে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের ভিত্তিহীন, বানোয়াট, অসত্য ও উসকানিমূলক কিছু অভিযোগ গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তার আনা এসব মিথ্যা অভিযোগ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে যায়। নুরুল হক নুরের এ বক্তব্যের ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলামের মর্যাদা ব্যাপকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।
‘নুরুল হক নুর এবং তার দলীয় কর্মীদের এমন বেআইনি কার্যকলাপ সম্পূর্ণ অনাকাঙ্ক্ষিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। তার এ হঠকারী কার্যক্রমে জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করার শামিল। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে নুরুল হক নুর ও তার দলীয় কর্মীদের এই বেআইনি ও ষড়যন্ত্রমূলক কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে।’
জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অর্জিত নতুন এই বাংলাদেশে দুই সহস্রাধিক হত্যা ও অর্ধলক্ষ ভাই-বোনের নির্যাতনের বিচার প্রক্রিয়ার জন্য পুনর্গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ও বিজ্ঞ চিফ প্রসিকিউটর সম্পর্কে ব্যক্তি স্বার্থে এমন কার্যক্রম অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। নুরুল হক নুর তার এই ভিত্তিহীন, অসত্য ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্য প্রত্যাহারপূর্বক ক্ষমা না চাইলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
আপনার মতামত লিখুন :