বাংলাদেশে নবনিযুক্ত কুয়েতের রাষ্ট্রদূত হিজ এক্সিলেন্সি মিস্টার আলি তুনিয়ান আবদুল ওয়াহাব হামাদাহ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
বৃহস্পতিবার (২২ জানুয়ারি) দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিদ্যমান ক্ষেত্রসমূহ যেমন কর্মসংস্থান, বাণিজ্য, জ্বালানি, খাদ্য নিরাপত্তা এবং নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত হামাদাহ কুয়েত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। উভয় পক্ষ বিনিয়োগ ও বাণিজ্যের সুযোগ ও সম্ভাবনা অন্বেষণ এবং পারস্পরিক সুবিধার জন্য প্রধান ক্ষেত্রগুলোতে কাঠামোগত সহযোগিতার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন।
পররাষ্ট্র সচিব এই দীর্ঘদিনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একটি রোল মডেল হিসেবে উল্লেখ করেন এবং বলেন, কর্মসংস্থান, জনগণের মধ্যে যোগাযোগ, জ্বালানি নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা এবং উন্নয়ন সহযোগিতা এই সম্পর্কের মূল ভিত্তি।
খাদ্য নিরাপত্তাকে নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি কুয়েতি বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক পণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনে বিনিয়োগ করতে। রাষ্ট্রদূত হামাদাহ এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানান এবং বিশেষ করে বাংলাদেশে হালাল খাদ্য শিল্পের উন্নয়নে কুয়েতের আগ্রহের কথা জানান।
কুয়েতি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি কর্মীদের কর্মদক্ষতা ও অঙ্গীকারের প্রশংসা করে বলেন, তারা কুয়েত এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি জানান, কুয়েত দক্ষ ও পেশাদার কর্মী যেমন চিকিৎসক, নার্স, আইটি বিশেষজ্ঞ প্রভৃতি নিয়োগে আগ্রহী।
পররাষ্ট্র সচিব সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকের অধীনে নার্স নিয়োগে কুয়েত সরকারের ভূমিকাকে ধন্যবাদ জানান। এছাড়া, কুয়েতের পক্ষ থেকে গৃহকর্মী নিয়োগের প্রস্তাব এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে একটি আইনি কাঠামো তৈরির প্রস্তাবেরও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেন।
বৈঠকে উভয় পক্ষ কুয়েত ও বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং কুয়েতে কর্মরত সামরিক পেশাজীবীদের পেশাদারিত্ব ও অঙ্গীকারের প্রশংসা করেন।
বৈঠকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করার প্রস্তাবে ইতিবাচক মনোভাব দেখান রাষ্ট্রদূত হামাদাহ। উভয় পক্ষ বাংলাদেশের সঙ্গে কুয়েতের সহকারী মন্ত্রী নেতৃত্বাধীন এশীয় সম্পর্ক বিষয়ক প্রতিনিধি দলের ঢাকা সফর এবং যৌথ কমিশন বৈঠকে কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্ভাব্য সফর দ্রুত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন।
আন্তর্জাতিক ফোরাম, বিশেষ করে এশিয়ান কোঅপারেশন ডায়ালগে (এসিডি) পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর সন্তোষ প্রকাশ করে উভয় পক্ষ। বৈঠকটি বিদ্যমান এবং নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোতে কাঠামোবদ্ধ এবং লক্ষ্যভিত্তিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেষ হয়।
আপনার মতামত লিখুন :