পিলখানা ট্রাজেডি ঘটনায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা মামলায় জামিন পাওয়ার পর একে একে মুক্তি পাচ্ছেন বিডিআর সদস্যরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে শতাধিক সদস্য মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তি পাওয়ার পর পরিবারের সদস্যরা ফুল দিয়ে তাদের বরণ করে নেন।
কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, আদালতের সব কাগজপত্র যাচাইয়ের পর তাদের মুক্তি দেয়া শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মোট ৪১ জন, কাশিমপুর-১ থেকে ২৬ জন, কাশিমপুর-২ থেকে ৮৯ জন, কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি সেল থেকে ১২ জনসহ মোট ১৭৮ জন বিডিআর সদস্যকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকার বিশেষ ট্রাইবুনাল-২ এর বিচারক মো. ইব্রাহিম মিয়া ২১ জানুয়ারি বিস্ফোরক আইনের মামলায় তাদের জামিন মঞ্জুর করেন এবং ২৩ জানুয়ারি জামিনপ্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক কর্নেল মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, জামিনপ্রাপ্তদের তালিকা হাতে পাওয়ার পর বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। এর মধ্যে হত্যা মামলায় ৮৫০ জনের বিচার শেষ হয় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর। যেখানে ১৫২ জনের ফাঁসি ছাড়াও ১৬০ জনের যাবজ্জীবন ও ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া খালাস পান ২৭৮ জন।
২০১৭ সালের ২৭ নভেম্বর সেই মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়। সেইসঙ্গে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয় ১৮৫ জনকে। পাশাপাশি আরও ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। আর খালাস পান ২৮৩ জন।
তবে হাইকোর্টের রায়ের আগে ১৫ জনসহ সব মিলিয়ে ৫৪ জন আসামি মারা গেছেন। ফলে হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২২৬ জন আসামি আপিল ও লিভ টু আপিল করেছেন। অন্যদিকে হাইকোর্টে ৮৩ জন আসামির খালাস এবং সাজা কমানোর রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। এসব আপিল ও লিভ টু আপিল এখন শুনানির অপেক্ষায়।
আপনার মতামত লিখুন :