ঢাকা সোমবার, ২৭ জানুয়ারি, ২০২৫

বিমানে বোমা হামলার হুমকিদাতার খুঁজে গোয়েন্দারা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৫, ১১:১৯ এএম

বিমানে বোমা হামলার হুমকিদাতার খুঁজে গোয়েন্দারা

ফাইল ছবি

পৃথক দুটি বার্তায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের দুটি ফ্লাইটে বোমা হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হুমকির বার্তা দুটি পাঠানো হয়। 

বার্তাগুলো আমলে নিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বিস্ফোরক বা  হুমকিস্বরূপ কোনো কিছু পাওয়া যায়নি। পরে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, হুমকির বার্তাগুলো ছিল ভুয়া।

বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) বলছে, সাধারণত কোনো হুমকি বা হামলার তথ্য পেলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়ানো হয়। পাশাপাশি তল্লাশি করা হয়। দুটি হামলার হুমকির এক্ষেত্রেও তা-ই করা হয়েছে। তবে হামলার বিন্দুমাত্র আলামত মেলেনি। 

ধারণা করা হচ্ছে, কেউ ব্যক্তিগতভাবে স্বার্থ হাসিলের জন্য বা দেশকে অস্থিতিশীল করতে ভুয়া বার্তা ছড়িয়েছে। যারা এ ধরনের কাজ করেছে তাদের চিহ্নিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করছে। তাদের আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।

এদিকে, হুমকি বা হামলার বার্তাগুলোর একটি পাকিস্তান ও অপরটি মালয়েশিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর থেকে বিমানবন্দরে কর্মকর্তা এপিবিএনের ডিউটি অফিসারের নম্বরে পাঠানো হয়। বার্তা পাঠানো নম্বরের মালিককে খুঁজতে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করে যাচ্ছে।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যেহেতু হামলার বিন্দুমাত্র আলামত মেলেনি। তাই ধারণা করা হচ্ছে কেউ বা কোনো মহল ইচ্ছাকৃতভাবে গুজব ছড়িয়ে ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিমান-নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইন-১৯৯৭ ও বেসামরিক বিমান চলাচল আইন-২০১৭ এর অধীনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

বিমান-নিরাপত্তা বিরোধী অপরাধ দমন আইন-১৯৯৭ এর ১৩ এর খ ধারায় এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে গুরুতর অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কেউ যদি এমন কোনো কাজ করেন যাতে বিমান উড্ডয়নে থাকাকালে বিমানটির নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে, সেক্ষেত্রে তার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

এছাড়াও বেসামরিক বিমান চলাচল আইন- ২০১৭ এর ২৯ ধারায় বিমান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড অথবা ৫ কোটি টাকা জরিমানা, ক্ষেত্রবিশেষে উভয়ই হতে পারে। 

এ ধারায় বলা হয়, ‘যদ কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা বেপরোয়াভাবে এরূপ কোনো কার্য করেন যাহাতে নির্বিঘ্নভাবে বিমান পরিচালনায় অসুবিধা সৃষ্টি হয় এবং উহা দ্বারা কোনো মানুষের জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন হয় তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অনধিক ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।’

এ আইনের ৩৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি এই আইনের অধীন কোনো অপরাধে সহায়তা করলে বা অপরাধ সংঘটনে ষড়যন্ত্র করলে বা প্ররোচনা দিলে এবং ষড়যন্ত্র বা প্ররোচনার ফলে অপরাধটি সংঘটিত হলে, উক্ত সহায়তাকারী, ষড়যন্ত্রকারী বা প্ররোচনাদানকারী উক্ত অপরাধের জন্য নির্ধারিত দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।’

এ বিষয়ে এয়ার ভাইস মার্শাল মো. মঞ্জুর কবীর ভূঁইয়া বলেন, কেউ যদি হামলার বিষয়ে তথ্য দিয়ে গুজব সৃষ্টি করে থাকে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ও রাতে পৃথকভাবে দুটি বার্তায় হামলার হুমকি দেওয়া হয়।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!