ঢাকা শনিবার, ০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

শেখ হাসিনার ৩ নির্বাচনের মতো ভোট চায় না বিদেশীরা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১, ২০২৫, ০৪:৫৪ পিএম

শেখ হাসিনার ৩ নির্বাচনের মতো ভোট চায়  না বিদেশীরা

বাংলাদেশের নির্বাচন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো মতামত দিতে শুরু করেছে। অন্তর্বর্তীকালীর সরকারকে সমর্থন দেওয়া দেশ যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারাও দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মতামত দিচ্ছে। পাশাপাশি দাতা সংস্থা ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকেও নানাভাবে নির্বাচিত সরকারের বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে বিদেশিরা ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের  তিনটি নির্বাচনের মতো ভোটারবিহীন, রাতের ভোট কিংবা সব দলের অংশগ্রহণহীন নির্বাচন চায় না। তারা চায় দেশ সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পথে আসুক।

কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, এরই মধ্যে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন সরকারের সমালোচনা শুরু হয়েছে। সব পক্ষই মনে করে, সংস্কার ইস্যুতে নির্বাচনে বিলম্ব করার সুযোগ নেই। সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একসঙ্গেই এ সরকারকে করতে হবে। দিন যত যাবে, নির্বাচনের চাপ তত বাড়তে থাকবে। এটা শুধু রাজনৈতিক দল থেকেই নয়, বিশ্ব সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকেও আসতে থাকবে।

এছাড়া নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেন কোনো বড় বিরোধ তৈরি না হয়, সেদিকেও সতর্ক থাকা প্রয়োজন মনে করছে সব পক্ষ। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, চীন, জাপান ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। সেসব বৈঠকে তারা এক ধরনের মধ্যস্থতা করছে।

ঢাকায় নবনিযুক্ত মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন আগামী নির্বাচন ও বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সিরিজ বৈঠক শুরু করেছেন। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক রাজনীতিক নাম প্রকাশ না করে বলেছেন, আলোচনায় রাজনীতি ও নির্বাচন প্রাধান্য পেয়েছে। দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক দলগুলোর মতামত জানতে চেয়েছেন। মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সাধারণত বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে আসা মতামত গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ কারণেই মার্কিন কূটনীতিক মূলত বাংলাদেশের নেতাদের মতামতই শুনছেন।

সম্প্রতি বেলজিয়ামভিত্তিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ (আইসিজি) অন্তর্বর্তী সরকারের গত পাঁচ মাসের কর্মকাণ্ড তুলে ধরেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে আইসিজি বলছে, ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকারের মধুচন্দ্রিমা শেষ। এখন চাপ বাড়ছে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর। শুধু প্রতিশ্রুত সংস্কার নয়, শাসনব্যবস্থার উন্নতির জন্যও সরকারের ওপর জনগণের চাপ বেড়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এখন অন্যতম বড় ইস্যুটি হলো জাতীয় নির্বাচনের তফসিল। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য বিএনপির দিক থেকে চাপ ছিল। তবে ড. ইউনূস জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। নির্বাচন যতই দূরে থাকুক তা ইতিমধ্যে বিএনপি, অন্যান্য রাজনৈতিক দল (যেমন জামায়াতে ইসলামী) এবং ছাত্রনেতাদের মধ্যে একটা আলোড়ন তুলেছে। আইসিজি বলছে, আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি এখন দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। দলটিকে অপেক্ষমাণ সরকার হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আরবি/এসবি

Link copied!