ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে রাজধানীসহ দেশের ৫০টি থানায় অসংখ্য মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ২২৫ মামলাকে বিশেষ মামলা হিসেবে বিবেচনা করেছে এবং এসব মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ শীর্ষ নেতাদের নাম রয়েছে।
তবে এসব মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া অনেক আসামি জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। গত ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫৭২ জন আসামি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। এসব মামলা সংক্রান্ত এক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানা গেছে, যা সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হয়েছে।
ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, বিশেষ মামলাগুলোতে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা নিয়মিত জামিন পাচ্ছেন। এমনকি বড় বড় নেতারাও জামিন পেতে শুরু করেছেন। তাদের মধ্যে সাবেক হুইপ আ স ম ফিরোজ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর, সাবেক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী, যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আনোয়ারুল ইসলামসহ অনেক নেতাই রয়েছেন।
পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, তিনি জামিনের বিরুদ্ধে শতভাগ বিরোধিতা করছেন, তবে বিষয়টি আদালতের উপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে আসামিরা জামিন পাচ্ছেন, যেমন—তদবির, বয়স, অসুস্থতা এবং রাজনৈতিক পরিচয়। অনেক সময় তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের সঙ্গে সমঝোতা করে প্রতিবেদন জমা দেন, যার ফলে জামিন পাওয়া সহজ হয়ে যায় বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগীরা জামিন পেয়ে যাচ্ছেন এবং এ ধরনের জামিনে আন্দোলনকারীরা হতাশ হয়ে উঠছেন।
এছাড়া, জামিন পাওয়া অন্যান্য ব্যক্তিদের মধ্যে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সাবেক সচিব ইসমাইল হোসেন, যুবলীগ নেতা মজিবুর রহমান, সাবেক এমপি গোলাম কিবরিয়া টিপু এবং আওয়ামী লীগ নেতা জামাল মোস্তাফা সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা উল্লেখযোগ্য।
এ বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার শেখ সাজ্জাত আলী বলেন, জামিনের বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার। তবে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা রয়েছে, কারণ তারা দেখছেন গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা দ্রুত জামিন পেয়ে যাচ্ছেন। এই বিষয়টি সরকারকে জানানো হয়েছে।
সূত্র: যুগান্তর
আপনার মতামত লিখুন :