রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা বেড়েছে কয়েকগুণ। বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে হওয়া অসম চুক্তি সীমান্তে জটিলতা বাড়িয়েছে। এই চুক্তি দু-দেশের সীমান্তরক্ষীদের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় নেন। এরপর থেকেই দু-দেশের মধ্যে নানা ইস্যুতে টানাপোড়েন দেখা দেয়। যার মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকে কেন্দ্র করে তৈরি হয় উত্তেজনা। সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে নির্মাণ কাজ নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এতে সীমান্তবাসীরা জড়িয়ে পড়েন।
১৯৭৫ সালে দুই দেশের সমঝোতায় বলা হয়েছিল, সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কাজ করতে হলে অপরপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। কিন্তু ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী, ১৫০ গজ নয়, প্রয়োজনে শূন্য রেখার মধ্যেও কাঁটাতারের বেড়া দিতে পারবে ভারত। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন চুক্তি বিজিবি ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)কে মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে।
এ বিষয়ে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাহেদ রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের চুক্তির সঙ্গে নতুন চুক্তি ভিন্নতর হওয়ায় এই ঘটনা ঘটছে। আমি মনে করি, এই নতুন চুক্তিটি অসম চুক্তি। এতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়েছে। গত ৩০ বা ৪০ বছরে ভারতের যেসব অভিলাষ ছিল, তা এই চুক্তির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়েছে।’
বিশ্লেষকরা বলছেন, ভারতকে খুশি রাখার জন্য সীমান্ত নিয়ে অসম চুক্তি করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাহেদ রহমান আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ হয়ত মনে করেছে, ভারতকে কিছু দেওয়া হলে তারা শাসনকে দীর্ঘায়িত করতে পারবে। কিন্তু আমরা শুধু ভারতকে দেওয়া দেখেছি, কখনো কিছু নেওয়া দেখিনি। যদি আওয়ামী লীগের দেশপ্রেম থাকত এবং দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা থাকত, তাহলে তারা এই চুক্তির দিকে যেত না।’
জানা গেছে, নয়াদিল্লিতে হতে যাওয়া বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠকে এই সীমান্ত ইস্যু মূল গুরুত্ব পেতে যাচ্ছে।