সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার সদস্য সচিব জেসিনা মোরশেদ প্রাপ্তির পদ স্থগিত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সদস্য সচিব আরিফ সোহেল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যশোর জেলার আহ্বায়ক রাশেদ খান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলা কমিটি গঠন সংক্রান্ত সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কিছু কর্মকাণ্ড নজরে আসে কেন্দ্রীয় কমিটির। যার প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার সদস্য সচিব জেসিনা মোরশেদ প্রাপ্তির পদটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো। একইসঙ্গে আনিত অভিযোগ তদন্তের জন্য সংগঠনটির কেন্দ্রীয় তিন নেতা আশরেফা খাতুন, ওয়াহিদুজ্জামান ও আকরাম হোসাইন রাজ দ্বারা গঠিত তদন্ত কমিটির কাছে সশরীরে তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
এদিকে নাম না প্রকাশ করে সংগঠনটির এক নেতা জানান, জেসিনা মোরশেদ প্রাপ্তির বিরুদ্ধে সর্বশেষ ঝিকরগাছার কমিটি গঠন নিয়ে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ ওঠে। এছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় কমিটিতে পদ বণ্টন নিয়ে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বরাবর যশোর জেলার ৫৮ জন নেতার স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি যশোরে তদন্তে আসেন দুই কেন্দ্রীয় নেতা। অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় জেসিনা মোরশেদ প্রাপ্তির পদ স্থগিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সশরীরে আগামী তিন কার্যদিবসের ভেতরে উপস্থিত হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যশোরের আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ‘চিঠিটি পেয়েছি। সেখানে সাংগঠনিক নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডের কারণে সদস্য সচিবের পদ স্থগিত করা হয়েছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জেসিনা মোরশেদ প্রাপ্তি’র মুঠোফোনে কয়েক দফা যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
উল্লেখ্য, গেল বছরের ২৬ নভেম্বর রাশেদ খানকে আহ্বায়ক এবং জেসিনা মোরশেদ প্রাপ্তিকে সদস্য সচিব করে ১০১ জনের যশোর জেলা কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটি ছয় মাসের জন্য অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্তু সপ্তাহ খানিকের মধ্যে কমিটিতে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পুনর্বাসনসহ নানা অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন ও ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ৯ জন নেতা পদত্যাগ করেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের আন্দোলনের পর কেন্দ্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিয়ে যশোরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কর্মী-সমর্থকরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যান। যা এখনো বিদ্যমান। একটি অংশের নেতৃত্ব দেন জেলার আহ্বায়ক রাশেদ খান, অন্যটির নেতৃত্ব দিতেন জেসিনা মোর্শেদ প্রাপ্তি।
আপনার মতামত লিখুন :