যাত্রীর নাম-পাসপোর্ট ছাড়া বিমান টিকিট বুকিং নিষিদ্ধ

বাংলাদেশ থেকে বিদেশগামী যাত্রীদের বিমান টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। 

সভায় বিমানের টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ চিহ্নিত করা হয়। বিশেষ করে নামবিহীন গ্রুপ সিট বুকিং ও টিকেট মজুতদারি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে টিকেটের দাম বাড়ানোর অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। ট্রাভেল এজেন্সিগুলো পাসপোর্ট, ভিসা বা যাত্রীর তথ্য ছাড়াই অগ্রিম আসন বুকিং করে রাখছে, যা টিকেট সংকট তৈরি করে এবং মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ দেয়।

বিদেশি এয়ারলাইন্সগুলোর মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন রুটে (রিয়াদ, দাম্মাম, জেদ্দা, ওমান, দোহা, কুয়ালালামপুর) টিকিট মজুতদারির অভিযোগও উঠেছে। ওমরাহ যাত্রা ও বিদেশগামী শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত টিকেটও অস্বাভাবিক দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া, কিছু এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট বন্ধ থাকাও টিকিটের উচ্চমূল্যের অন্যতম কারণ বলে সভায় আলোচনা হয়।  

কঠোর সিদ্ধান্ত ও নতুন নিয়মাবলী:  
১. নাম ছাড়া টিকেট বুকিং নিষিদ্ধ: যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট নম্বর ও পাসপোর্ট কপি ছাড়া কোনো বুকিং করা যাবে না।  
২. সীমিত বুকিং সময়: বুকিংয়ের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে টিকেট ইস্যু না হলে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল হবে।  
৩. গ্রুপ বুকিংয়ের শর্ত: ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বুক হওয়া সকল গ্রুপ টিকিট আগামী ৭ দিনের মধ্যে যাত্রীর নাম ও পাসপোর্ট নম্বরসহ ইস্যু নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় এয়ারলাইন্স নিজ উদ্যোগে তা বাতিল করবে।  
৪. তদন্ত কমিটি গঠন: গত ৬ মাসের টিকেটের মূল্যবৃদ্ধির তদন্তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।  
৫. টাস্কফোর্স গঠন: টিকেটের মূল্যবৃদ্ধি তদারকিতে ১৩ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সরকার আশা করছে, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিমান টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঠেকানো সম্ভব হবে এবং যাত্রীরা ন্যায্য মূল্যে টিকেট কিনতে পারবেন।