ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

জাতিসংঘের প্রতিবেদন

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ১৪০০ জনেরও বেশি মানুষ হত্যার অভিযোগ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ০৩:৪২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন প্রকাশিত এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময়ে বাংলাদেশে ১,৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনা ঘটতে পারে। 

জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এই সময়কালে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে এবং তাদের অধিকাংশই বাংলাদেশের নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে আহত হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হত্যাকাণ্ডগুলো ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্টের মধ্যে সংঘটিত হয় এবং নিহতদের মধ্যে ১২ থেকে ১৩ শতাংশ শিশু ছিল। নিহতদের মধ্যে ৪৪ জন পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ পুলিশের ও নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে একযোগে সাবেক ক্ষমতাসীন সরকারের সদস্যরা এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সহিংস উপাদানগুলোর বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে ব্যবস্থা নিয়েছিল। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সাবেক সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য জনতার বিরোধিতাকে দমন করতে চেয়েছিল। 

হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, “এটি সাবেক সরকারের একটি সমন্বিত এবং পরিকল্পিত কৌশল ছিল, যেখানে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা অভিযুক্ত হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। তিনি আরও বলেন, নিরাপত্তা বাহিনী অবৈধভাবে বিক্ষোভকারীদের হত্যা অথবা পঙ্গু করেছিল, এমনকি কিছু ঘটনার মধ্যে বিন্দু-শূন্য পরিসীমা থেকে গুলি চালানো হয়েছিল।

তিনি জানান, এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রমাণ মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক আরও বলেন, জাতীয় নিরাময় এবং ন্যায়বিচারের জন্য এই ভয়াবহ ঘটনাগুলোর সত্য উন্মোচন করা এবং বিচার কার্যক্রম শুরু করা অত্যন্ত জরুরি।

এছাড়া, জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় গত সেপ্টেম্বর মাসে একটি স্বাধীন তদন্ত দলের পাঠায়, যা ঘটনার বিষয়ে তথ্য অনুসন্ধান করতে সহায়তা করেছে। এই তদন্তের সময় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ব্যাপক সহযোগিতা করেছেন এবং তদন্ত দলকে প্রবেশাধিকার ও প্রয়োজনীয় নথিপত্র সরবরাহ করেছেন।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং জাতিসংঘ ভবিষ্যতে আরও পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত বলে জানিয়েছে।