চলতি মাসেই পদত্যাগ করছেন ৩ উপদেষ্টা

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৫, ২০২৫, ০৩:৫৭ পিএম

চলতি মাসেই পদত্যাগ করছেন ৩ উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আসছে বড় পরিবর্তন। তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, তিনিসহ উপদেষ্টা পরিষদের অন্যান্য শিক্ষার্থী সদস্যরা কয়েক দিনের মধ্যে পদত্যাগ করতে পারেন। অন্যদিকে, এ মাসের শেষের দিকে ঘোষণা আসবে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের নিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের।

গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়েছেন তথ‍্য উপদেষ্টা।

তথ‍্য উপদেষ্টা বলেন, ছাত্রদের নেতৃত্বে একটা নতুন রাজনৈতিক দলের পরিকল্পনা রয়েছে, তবে সেটি বাস্তবায়ন করতে হলে সরকারে থেকে কাজ করা সম্ভব নয়। আমি যদি ওই দলের কার্যক্রমে যুক্ত হতে চাই, তবে সরকার থেকে পদত্যাগ করবো।

তিনি আরও বলেন, আমরা চিন্তাভাবনা করছি। আমি ব্যক্তিগতভাবেও চিন্তাভাবনা করছি। যদি মনে করি, সরকারের থেকে আমার মাঠে যাওয়া, জনগণের সঙ্গে কাজ করা বেশি জরুরি। মনে হয় আমি সরকার ছেড়ে দেবো এবং সে দলের প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবো।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দলের গঠন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সকলের কাছে ঘোষণা করা হবে। দলটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও এ মাসেই আসবে।

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দল গঠন ও ভোটের রাজনীতি ভিন্ন বিষয়, তাই মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। একই সাথে, বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করার পর সরকারের সঙ্গে তাদের দূরত্ব কিছুটা কমেছে বলে মনে করেন নাহিদ ইসলাম।

এদিকে, গত বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বাংলামোটর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা শিগগিরই নতুন দলের ঘোষণা নিয়ে আসতে চাই। এই নতুন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে জনগণ কী প্রত্যাশা করে সে সম্পর্কে সক্রিয়ভাবে জনসাধারণের মতামত সংগ্রহ করতে চাই। দেশের ভবিষ্যতের মূল অগ্রাধিকারগুলো নির্ধারণ করতে আমরা দেশব্যাপী জনমত গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছি। এ মুহূর্তে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অন্তত এক লাখেরও বেশি মানুষের মতামত সংগ্রহ করা। নতুন দলের জন্য নাম, প্রতীক এবং নানা বিষয়ে প্রস্তাবের জন্য জনগণকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। আপনি কেমন দল চান, আমরা তা জানতে চাই এবং সে আদলেই দলটি গড়তে চাই। আমরা মনে করি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি একটি অনন্য উদ্যোগ, যেখানে একটি রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য সাধারণ জনগণের মতামত নেওয়া হচ্ছে।

হাসনাত বলেন, নতুন দল গঠন হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটি উভয়ই জুলাই বিপ্লবের চেতনা রক্ষার প্ল্যাটফর্ম হিসেবে অব্যাহত থাকবে। একই সঙ্গে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে আমাদের রাজনৈতিক দল গড়ে তুলার জন্য দুটি সংগঠন কাজ করবে। আমরা অনলাইনে এবং অফলাইনে আমরা কার্যক্রম পরিচালনা করব। পরিবর্তন কখনো শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসগুলোতে ঘটে না। এ কারণেই আমরা মাঠে আছি, কৃষকদের সঙ্গে আছি। আমরা রিকশাচালকদের কথা শুনব, পোশাক শ্রমিকদের কথাও শুনব। এ দল ওপর থেকে নয়, জনগণের মধ্য থেকে উঠে আসবে। আমরা পুরো ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে শুধু হাসিনা এবং গণভবনের পতন ঘটাতে পেরেছি। কিন্তু গণভবনের সঙ্গে রাষ্ট্র উপাদানের অন্যান্য যে বিষয়গুলো রয়েছে, সেগুলোর বিলোপ ঘটাতে পারিনি এবং এই ভূখণ্ডের মানুষের দীর্ঘদিনের লড়াইয়ের চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি।

নতুন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রত্যাশা জানতে জনসাধারণের মতামত সংগ্রহ এবং অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি দেশব্যাপী জনমত গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করেছে বলে জানান হাসনাত আবদুল্লাহ।

একই সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এটি আমাদের দেশে একটি নতুন রাজনৈতিক দল কর্তৃক জনমত গ্রহণের উদ্দেশ্যে গৃহীত সবচেয়ে বড় পরামর্শমূলক প্রচেষ্টা। আমরা শুধু একটি দল শুরু করছি না, আমরা এমন একটি আন্দোলন শুরু করছি যেখানে একজন পোশাক শ্রমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক পর্যন্ত প্রত্যেক নাগরিকের তাদের জীবনকে প্রভাবিত করে এমন নীতিগুলো গঠনে মতামত রয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী অভ্যুত্থানের মুখে গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগের পতন ঘটিয়েছি। দেশ থেকে আমরা ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের পতন ঘটাতে পারলেও রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে বিদ্যমান ফ্যাসিবাদের বিলোপ আমরা ঘটাতে পারিনি। আমরা মনে করছি ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ প্রদানে পূর্বের বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলো বারবার ব্যর্থ হয়েছে।

আরবি/এসবি

Link copied!