ঢাকা শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

দেশে বিলুপ্তির পথে ১৪ ভাষা, রক্ষায় কাজ চলছে তিনটির

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫, ১০:৪১ এএম
ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে বিলুপ্তির পথে থাকা ১৪টি ভাষার মধ্যে তিনটি ভাষা রক্ষায় কাজ শুরু হয়েছে। রিংমিটচ্যা, লালেং (পাত্র) এবং কন্দো ভাষা বাঁচাতে জরিপ করছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। তবে অনেক ভাষার নিজস্ব বর্ণমালা না থাকার কারণে তাদের সংরক্ষণ করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ছে।

পাহাড়ি জনজাতির ভাষা গবেষক ইয়াঙান ম্রো ‘ম্রো’ ভাষার প্রথম ব্যাকরণ লিখেছেন। এ ভাষায় শুদ্ধভাবে কথা বলা এবং সাহিত্য চর্চার উদ্দেশ্যে তার এই প্রচেষ্টা।

এখানেই ইয়াঙান ম্রো থেমে যাননি, তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সাত বীরশ্রেষ্ঠের জীবনীও লিখেছেন ম্রো ভাষায়। এর মাধ্যমে তিনি স্বজাতির নতুন প্রজন্মের কাছে বীরত্বগাঁথা তুলে ধরেছেন।

[35098]

ভাষা গবেষক ইয়াঙান ম্রো বলেন, ‘ম্রো শব্দগুলোর মাঝে একজনের সঙ্গে আরেকজনের মিল না থাকায়, বিশেষ করে লেখার সময় এবং বলার সময় আমি খুবই কষ্ট পেতাম। আমি অনেক দিন চেষ্টা করার পর এক ধরনের সমাধান পেলাম। এখন অনেক ছেলে-মেয়ে এই ব্যাকরণ নিয়ে পড়াশোনা করে, বিশেষ করে গ্রাম-গঞ্জে চিঠিপত্রে এটি ব্যবহার করে।’

বাংলাদেশে বর্তমানে ৪১টি ভাষার প্রচলন রয়েছে। তবে এর মধ্যে ১৪টি ভাষা বিলুপ্তির পথে, যেমন রিংমিটচ্যা, পাত্র, কন্দো। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও সাদরি জাতির ভাষায় কিছু বই রয়েছে, তবে পড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই।

[35095]

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট বলছে, তারা প্রতিটি জাতিগোষ্ঠীর নিজস্ব ভাষায় শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তাই বর্তমানে বিলুপ্তির ঝুঁকিতে থাকা তিনটি ভাষার রক্ষায় জরিপ পরিচালনা করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা তিনটি ভাষাকে টার্গেট করেছি, যেগুলো বিভিন্ন অবস্থায় রয়েছে। পাত্র, কন্দো, রিংমিটচ্যা—এই ভাষাগুলোর ওপর জরিপ করা হচ্ছে। জরিপের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে তাদের ভাষার সংরক্ষণের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’

২০২৪ সালে বান্দরবানের আলিকদমে রিংমিটচ্যা ভাষার প্রথম স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে নতুন ৫০ শিক্ষার্থী ভাষা শিখছে।