ঢাকা শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

লিবিয়ায় পাচারের শিকার ব্যক্তিদের মুখে ভয়াবহ বর্ণনা

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৫, ০৯:০৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

‘লিবিয়ায় মাফিয়ার কাছে আটক ছিলাম। পরিবার ঋণ, জমি বন্ধক ও আত্মীয়দের কাছ থেকে ধার নিয়ে আমার মুক্তিপণ জোগাড় করে দালালদের মোট ২৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছে। এখন আমার পরিবারের আর কিছুই নেই।

কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুরের ইয়াসিন হাওলাদার। তিনি আজ শুক্রবার ভোরে ভূমধ্যসাগরে মৃত্যুর মুখ থেকে দেশে ফিরেছেন।

তার সঙ্গে আরও চার বাংলাদেশিও ফিরেছেন। তাদের সবারই গল্প প্রায় একই রকম। অন্যরা হলেন- ঢাকার আল মোস্তাকিম সরকার, শেরপুরের মোজাম্মেল হক এবং মাদারীপুরের জিহদ ফকির ও রোমান হাওলাদার। 

তাদের ভাষ্য, উন্নত জীবন ও ভালো কাজের আশায় ইউরোপের পথে পা বাড়িয়েছিলেন তারা। পাচারকারীদের প্রলোভনে পড়ে প্রথমে লিবিয়ায় গিয়েছিলেন।  কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পরেই তাদের ভবিষ্যতের সুখ স্বপ্ন পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে।

এক পর্যায়ে তাদেরকে ভয়ংকর মানব পাচার চক্র মাফিয়ার হাতে তুলে দেয়। পাঁচ বাংলাদেশি শিকার হন নির্মম নির্যাতনের। তাদের পরিবারের কাছ থেকে আদায় করা হয় মুক্তিপণ।

পাচারের শিকার এই ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে মানব পাচার চক্রের সদস্যরা তাদের জিম্মি করে অত্যাচার করে। নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে স্বজনদের কাছে মুক্তিপণ চায়।

দেশ থেকে টাকা পাঠানোর পরে তাদেরকে ভূমধ্যসাগর দিয়ে ইতালি পাঠানোর জন্যে বোটে তুলে দেয়া হয়।

পরে সাগরে তাদের বোট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড তাদের উদ্ধার করে। এরপর তাদেরকে আলজেরিয়া সীমান্তে নিয়ে গেলে, তারা সেখানে অনুপ্রবেশের দায়ে নানা মেয়াদে জেল খাটেন।

পরে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড এবং আলজেরিয়ার বাংলাদেশ দূতাবাসের সহায়তা নিয়ে তাদেরকে দেশে ফেরানো হয়।