‘ছাত্রলীগের নেতারা আমাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে নিয়ে যায়। আমার ফোন কেড়ে নেয়। অনেক বাজে কথা শোনায় এবং গালি দেয়। একপর্যায়ে আমাকে ধর্ষণ করে।’
এভাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন এক লোমহর্ষক ঘটনার বর্ণনা দিলেন এক ছাত্রী।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা নিয়ে ছবি ও তথ্যচিত্রের আর্কাইভ প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে ওই ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।
ওই ছাত্রী বলেন, গত ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চাষাঢ়া গোলচত্বর থেকে ছাত্রলীগের নেতারা তাকে তুলে নিয়ে যায়। ছাত্রলীগের ২০-২৫ জন ছিল।
‘প্রথমে তাদের (ছাত্রলীগ) একটি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে নির্যাতন করা হয়। একপর্যায়ে সবাই অফিস থেকে চলে যায়। তখন শুধু দুজন থাকে। সে দুজন আমাকে ধর্ষণ করে।’
শিক্ষার্থী আরও জানান, নভেম্বরের ১০ তারিখে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন। ৩১ ডিসেম্বর তার গর্ভপাত হয়।
[35332]
ওই শিক্ষার্থীর দাবি, ওই ঘটনা সমন্বয়ক থেকে শুরু করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রায় সবাই জানত। তবে অনেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও তার বিচার পাননি।
‘কেউ গুরুত্ব সহকারে দেখেনি বিষয়টি। যে দুই লোক ধর্ষণ করেছে তারা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের কোনো শাস্তি হয়নি।’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমি যখন সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা আপুকে বিষয়টি জানাই। তিনি বলেন, তোমার সাথে অনেক খারাপ হয়েছে। তারপর এ বিষয়টা ক্লোজ করে দেন।’
[35341]
সমন্বয়ক নুসরাত তাবাচ্ছুমকেও জানায় বলে তার দাবি। তবে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করতে বলে আর সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।
তার দাবি, সারজিস প্রথম থেকেই বিষয়টি জানতেন। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে তাদের শাস্তির আওতায় আনারও আশ্বাস দেন। কিন্তু কিছুই করেননি।
এ বিষয়ে সমন্বয়ক নুসরাত তাবাচ্ছুম এক ফেসবুক স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘ওই ছাত্রীকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল। তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা সব কিছুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু, কিন্তু তার অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না।’