ঢাকা মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

৩ দফা দাবিতে গ্রামীণফোনের সামনে সাবেক কর্মীরা, গ্রেপ্তার ১১

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৫, ০৭:১৪ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

৩ দফা দাবিতে রাজধানীর বসুন্ধরায় মোবাইল টেলিকম অপারেটর গ্রামীণফোনের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে সাবেক কর্মীরা।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) চাকুরিচ্যুত ও অধিকারবঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবানে এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন তারা। এই কর্মসূচি থেকে ১১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ভাটারা থানা পুলিশ। তবে নিজেদের কর্মসূচিকে শান্তিপূর্ণ দাবি করে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর হামলা এবং গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ঐক্য পরিষদ।

চাকুরিচ্যুত ও অধিকারবঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহবায়ক আবু সাদাত মো. শোয়েব স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে এবং বিনা উস্কানিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানো হয়। এতে আহবায়ক শোয়েব সহ আরও অনেক শ্রমিক আহত হয়। পাশাপাশি ৩ জন নারী এবং ৮ জন পুরুষ আন্দোলনকারীকে গ্রেপ্তারকরেছে পুলিশ।

এই হামলা ও গ্রেপ্তারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সংগঠনটির পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় যে, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল না হয়ে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে, যা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই গ্রামীণফোন কার্যালয়ের সামনে ৩ দফা দাবিতে ৩ দিনের অবস্থান কর্মসূচি পালনে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারীরা। এক পর্যায়ে পুলিশের সাথে আন্দোলনকারীদের বাদানুবাদ হয়। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে এসময় জলকামান প্রয়োগ করে পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে ১১ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করে ভাটারা থানা পুলিশ।

বিষয়টি রূপালী বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেন ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম।

এ বিষয়ে এক লিখিত বক্তব্যে গ্রামীণফোন জানায়, গ্রামীণফোনের কিছু সাবেক কর্মী চাকুরি সংক্রান্ত নানাবিধ দাবি-দাওয়া নিয়ে গত কয়েক মাস যাবত জিপি হাউজের সামনে সমবেত হচ্ছেন। আমাদের জানা মতে, তাদের বেশিরভাগ বেশ কয়েক বছর আগেই প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যান এবং আইন অনুযায়ী তাদের প্রাপ্য গ্রহণ করেন। এছাড়া তারা যে দাবিগুলো তুলেছেন সেগুলো বর্তমানে মহামান্য আদালতে বিচারাধীন। বিচারিক ব্যবস্থার প্রতি গ্রামীণফোন শ্রদ্ধাশীল। তাই আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আদালতেই এসব বিষয়ের নিষ্পত্তি হবে বলে বিশ্বাস করে গ্রামীণফোন।

গ্রামীণফোন জানায়, গ্রামীণফোন শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারকে সম্মান করে। তবে উক্ত ব্যক্তিরা জিপি প্রাঙ্গণের প্রবেশ ও বহির্গমনের পথ অবৈধভাবে গত ৪ ফেব্রুয়ারি সহ বেশ কয়েকবার অবরূদ্ধ করে। ফলে গ্রামীণফোনের কর্মী, সরবরাহকারী, ও গ্রাহকদের অবাধ চলাচল উল্লেখযোগ্যভাবে বাঁধাগ্রস্থ হয়। তারা সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জিপি হাউজে আটকা পড়েন। এ পরিস্থিতিতে কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন। গ্রামীণফোন দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং কর্মী ও গ্রাহকদের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে ব্যক্তি ও সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জিপি হাউস সংলগ্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অবস্থান নেয়।

প্রসঙ্গত, ৫ শতাংশ বিলম্ব জরিমানাসহ লভ্যাংশ অচিরেই প্রদান করা, জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো এবং চাকরিচ্যুত কর্মীদের পুনঃবহাল এবং গ্রামীণফোনের সকল অবৈধ এবং অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করা; এই দিন দাবিতে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছে চাকুরিচ্যুত ও অধিকারবঞ্চিত গ্রামীণফোন শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। সমস্যার সমাধানে বিক্ষোভকারীরা প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।