ব্রিডার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ সংগঠনের দুইটির ১০ থেকে ১২টি কোম্পানি দেশের পুরো পোল্ট্রি খাতকে জিম্মি করে রেখেছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএ) সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার।
শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ওই কোম্পানিগুলোর নাম বারবার পত্রিকার শিরোনাম হলেও সরকার কেন নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না? তাহলে কি তারা সরকারের থেকেও শক্তিশালী?২০২২ সালের আগস্টে আমরা সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে সিন্ডিকেটের অপকর্ম ফাঁস করি। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর তদন্ত করে সিন্ডিকেটের সত্যতা খুঁজে পায় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়। পরে প্রতিযোগিতা কমিশন ৮ থেকে ১০টি পোল্ট্রি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করে এবং চারটি কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়।
সুমন হাওলাদার বলেন,সবশেষ গত ২৬ ফেব্রুয়ারি আরও একটি কোম্পানিকে জরিমানা করা হয়। কিন্তু এই কোম্পানিগুলো হাইকোর্টে আপিল করে মামলা স্থগিত করিয়ে নিয়েছে। ফলে সিন্ডিকেট আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং তারা সামান্য জরিমানা দিয়েই পার পেয়ে যেতে পারে।
তিনি আরও বলেন, গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে সরকার ডিম ও মুরগির দাম নির্ধারণ করতেই ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বড় গ্রুপগুলো কৃত্রিম সংকট তৈরি করে মুরগির বাচ্চার উৎপাদন কমিয়ে দেয়। পরিকল্পিতভাবে শবে বরাত, রমজান, ঈদসহ বিভিন্ন সময়ে বাজারে সংকট তৈরি করে মুরগির বাচ্চার দাম বাড়ানো হয়।
সুমন হাওলাদার বলেন, প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন হিসেবে আমরা প্রতিনিয়ত খামারিদের স্বার্থ রক্ষা এবং ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষায় কাজ করছি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ৫০-৬০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান বজায় রাখা এবং পোল্ট্রি শিল্পের সুষ্ঠু উন্নতি নিশ্চিত করা। কিন্তু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো কার্যকর না হওয়ার কারণে বড় করপোরেট হাউসগুলো আমাদের মতো ছোট উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, মুরগির বাচ্চা উৎপাদনকারী ব্রিডার কোম্পানিগুলো প্রতি সপ্তাহে ২ কোটি এবং প্রতি মাসে ৮ কোটি বাচ্চা উৎপাদন করে। প্রতি বাচ্চায় ২০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা ধরা হলে ছয় মাসে সিন্ডিকেটের পকেটে জমে প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। অন্যদিকে, প্রান্তিক খামারিরা ন্যায্যমূল্য না পেয়ে দিন দিন উৎপাদন থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছেন, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ৫০-৬০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান।