এবার পুলিশ লাইনে গোপন বন্দিশালা বা ‘আয়নাঘরের’ খোঁজ পাওয়ার কথা জানিয়েছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন।
বগুড়া পুলিশ লাইনে এই বন্দিশালার খোঁজ পাওয়া গেছে। যেখানে বিভিন্ন জায়গা থেকে বন্দিদের জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করা হতো।
গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের সদস্য নূর খান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ওই বন্দিশালার কথা তুলে ধরে মঙ্গলবার (০৪ মার্চ) রাজধানীর গুলশানে কমিশনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে নূর খান বলেন, পুলিশ লাইনের ভেতরে কারাগারের মতো গোপন বন্দিশালা তৈরি করে রাখা হয়েছিল।
‘যেটি একেবারেই এবসার্ট একটা ব্যাপার। সেটি আমরা বগুড়ায় পেয়েছি। আমাদের ধারণা অনেক ক্ষেত্রে এ ধরনের বন্দিশালা আরও পাব।’
বন্দিশালা গত ১৫ বছরে করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে নূর খান বলেন, ‘এগুলো গত ১৫ বছরের মধ্যেই বানানো হয়েছে।’
‘সম্ভবত গত ১০-১২ বছরের মতো। এখানে বিভিন্ন জেলা থেকে বন্দিদের এনে রাখা হতো, জিজ্ঞাসাবাদ এর নামে নির্যাতন করা হতো এবং এখান থেকেও অনেকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটতে পারে।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ‘বিশেষ’ স্থানে রাখা হতো। এ নিয়ে সুইডেনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নেত্র নিউজে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে এসব স্থান ‘আয়নাঘর’ নামে প্রকাশ্যে আসে।
গুম হওয়া ব্যক্তিদের অনেকে শেখ হাসিনা সরকারের ক্ষমতাচ্যুতির পর আয়নাঘর থেকে ফিরে আসেন পরিবারের কাছে।
তাদের বয়ানে উঠে এসেছে আয়নাঘরের ভয়াবহতা।
সম্প্রতি (গত ১২ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মী ও ভুক্তভোগীদের নিয়ে আয়নাঘর পরিদর্শন করেন।
সেখানে উঠে আসে আয়নাঘরের ভয়ঙ্কর নানা চিত্র।
‘আয়নাঘর’ পরিদর্শন শেষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আইয়ামে জাহেলিয়াত যুগের একটা নমুনা প্রতিষ্ঠা করে গেছে। আমাকে নতুন করে বলতে হবে না। বর্ণনা দিতে গেলে বলতে হয়—আয়নাঘরের ভেতরে খুবই বীভৎস দৃশ্য। এখানে মনুষ্যত্ববোধের কিছু নেই। যা হয়েছে তা নৃশংস।’