পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে ২৫ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত ১৪ দিন (দুই সপ্তাহ) বালুবাহী নৌযান (বাল্কহেড) চলাচল নিষিদ্ধের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে শিপিং এ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম (এসসিআরএফ) এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটি।
এছাড়া সব ধরনের অবৈধ নৌযানের বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর দাবি জানিয়েছে সংগঠন দুটি। এ জন্য সারা দেশে অবিলম্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন সংগঠন দুটির নেতারা।
বুধবার (৫ মার্চ) এক যৌথ বিবৃতিতে জাতীয় কমিটির সভাপতি হাজী মোহাম্মদ শহীদ মিয়া ও এসসিআরএফ এর সাধারণ সম্পাদক লায়ন মো. জাহাঙ্গীর আলম নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ), নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডের প্রতি এই আহবান জানান।
বিবৃতিতে সনদবিহীন চালককে (মাস্টার ও ড্রাইভার) শাস্তি প্রদানের পাশাপাশি অবৈধ চালক নিয়োগ দেয়ায় নৌযান মালিককেও আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়।
জনস্বার্থে জেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশকেও এ কাজে সম্পৃক্ত করার আহ্বান জানান সংগঠন দুটির নেতারা।
বাল্কহেডের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত নৌ দুর্ঘটনা ও যাত্রীবাহী নৌযান ডুবে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়, সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত বাল্কহেড চলাচল নিষিদ্ধ হলেও প্রশাসনের নাকের ডগায় রাতে শত শত বাল্কহেড চলাচল করছে।
নৌ পরিবহন অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে জাতীয় কমিটি ও এসসিআরএফ জানায়, নিবন্ধিত নৌযানের সংখ্যা ১৫ হাজার হলেও সারা দেশে বিভিন্ন ধরনের অন্তত ৮৫ হাজার নৌযান রয়েছে। এই ৭০ হাজার অবৈধ নৌযানের মধ্যে অন্তত ছয় হাজার রয়েছে বাল্কহেড।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, নিবন্ধিত ১৫ হাজার নৌযানের মধ্যে নিয়মিত বার্ষিক সার্ভে (ফিটনেস পরীক্ষা) করা হয় মাত্র আট হাজারের। নিয়ন্ত্রক সংস্থা নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে অবশিষ্ট সাত হাজার ত্রুটিপূর্ণ নৌযান অবাধে চলাচল করছে। কর্তৃপক্ষ সেগুলোর বিরুদ্ধে অদৃশ্য কারণে ব্যবস্থা না নেওয়ায় অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে।
জাতীয় কমিটি ও এসসিআরএফ অবৈধ ও আইন অমান্যকারী নৌযান চলাচলের সুযোগ দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও নৌযান মালিককেও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
বিবৃতিতে নৌপথে ঘরমুখী হাজার হাজার মানুষের নিরাপদ যাতায়াতের স্বার্থে উপরোল্লিখিত ১৪ দিন বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।