ঢাকা সোমবার, ১০ মার্চ, ২০২৫

ঢাবির ছাত্রী যৌন হেনস্তাকারীকে ছুটিতে পাঠানো হলো

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৫, ০৯:৩৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে ‘ওড়না পরা’ নিয়ে হেনস্তা করার ঘটনায় কর্মচারী মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এছাড়াও ঘটনাটি তদন্তে জন্যে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

শুক্রবার (৭ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. রফিকুল ইসলাম এ ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক ছাত্রীকে হেনস্তা করার ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তকালীন সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে ছুটিতে থাকতে বলা হয়েছে। তদন্তের পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে হেনস্তাকারীর জামিনে ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশটিরও অধিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা বিবৃতি দিয়েছে। এ সময় হেনস্তাকারীকে চাকরিতে বহাল করলে ক্লাস বর্জনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর ড. রফিকুল ইসলাম বলেন, তদন্ত কমিটি আগামী পরশু রবিবার (৯ মার্চ) এ নিয়ে বসবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য কাজ শুরু করবে। তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট অভিযুক্ত কর্মচারী মোস্তফা আসিফ অর্ণবের ব্যাপারে পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।

এর আগে গত বুধবার হেনস্তার শিকার হওয়া ওই ছাত্রীর ফেসবুক পোস্টে লেখেন, এই লোকটা আজকে আমাকে শাহবাগ থেকে আসার পথে হ্যারাস করেছে। সে আমাকে হুট করে রাস্তায় দাঁড় করায় দিয়ে বলতেছে আমার ড্রেস ঠিক নাই, আমি পর্দা করি নাই, ইত্যাদি ইত্যাদি এবং তার আচরণ খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিল। পরবর্তীতে তাকে আমি জিজ্ঞাসা করি আপনি কোন হলে থাকেন কোন ডিপার্টমেন্টে পড়েন। সে বলে সে এই ক্যাম্পাসের কেউ না।

আমি সালওয়ার কামিজ পরে ঠিকমতো ওড়না পরে ছিলাম। সে আমাকে বলে আমার নাকি ওড়না সরে গেছে।

পরে আমি তাকে বললাম, এইটা তো আপনার দেখার বিষয় না, আর আপনার তাকানোও জাস্টিফাইড না। এরপর আমি প্রক্টরকে কল দিতে চাইলে সে দৌড় দিয়ে চলে যায়।

এরপর অভিযুক্ত মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালত তাকে জামিন দেন। পরে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মামলা প্রত্যাহার করেছেন। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে প্রক্টর চাপ প্রয়োগ করেছে বলে অনেক শিক্ষার্থীকে অভিযোগ তুলতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে প্রক্টরিয়াল বডি থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন একটি তথ্য ছড়িয়েছে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার মামলা প্রত্যাহার করতে অনুরোধ বা চাপ প্রয়োগ করেছে—এ তথ্যটি অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ছড়ানো হচ্ছে।

মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী স্বেচ্ছায় মামলা প্রত্যাহার করেছেন। এ ক্ষেত্রে কেউ তাকে জোর করেননি।