গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের সড়কে ৫৯৬টি দুর্ঘটনা ঘটে, যার মধ্যে নিহত হয়েছেন ৫৭৮ জন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ১৩২৭ জন। দুর্ঘটনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে, যা মোট নিহতের ৩৯.২৭ শতাংশ বা ২২৭ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে। সড়ক দুর্ঘটনার পাশাপাশি ২টি নৌ-দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত এবং ১৪টি রেল দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন।
শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে সংবাদ মাধ্যমে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমানের পাঠানো এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা যায়। ফাউন্ডেশনটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।
পরিসংখ্যান:
- মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২২৭ জন।
- বাসের দুর্ঘটনায় ৩৩ জন, ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রাক্টর-ট্রলি-ড্রাম ট্রাক আরোহী ৫৬ জন, প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস আরোহী ২২ জন, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক, সিএনজি, অটোরিকশা, অটোভ্যান, লেগুনা) ৯২ জন এবং স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের দুর্ঘটনায় (নসিমন, ভটভটি, মাহিন্দ্র, টমটম, এসকেভেটর) ২০ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনের মৃত্যুর হার অনুযায়ী দুর্ঘটনার স্থান:
- এ মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। ২০৫টি দুর্ঘটনায় ১৯৮ জন নিহত হয়েছেন।
- আর সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ঘটেছে বরিশাল বিভাগে। এখানে ৩৪টি দুর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত হয়েছেন।
ঢাকা জেলার দুর্ঘটনা:
- ঢাকা জেলায় এসময় ৪১টি দুর্ঘটনায় ৪৮ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে:
- ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন।
- বেপরোয়া গতি ও চালকদের অদক্ষতা।
- মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল।
- তরুণ-যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানো।
- জনসাধারণের মধ্যে ট্রাফিক আইন না জানা ও না মানার প্রবণতা।
- দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা এবং বিআরটিএ’র সক্ষমতার ঘাটতি।
সুপারিশ:
- দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ বাড়াতে হবে।
- চালকদের বেতন-কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করতে হবে।
- বিআরটিএ’র সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
- ট্রাফিক আইন যথাযথভাবে প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
- মহাসড়কে স্বল্পগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে আলাদা সার্ভিস রোড তৈরি করতে হবে।
- চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে এবং সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাধাহীনভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এভাবে সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক আরও বিভিন্ন সুপারিশ ও পদক্ষেপের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা রোধের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।