চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ৫৮ শতাংশ মানুষ জাতীয় নির্বাচন চায়। এর মধ্যে ৩১.৬ শতাংশ আগামী জুন মাসেই নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে, আর ২৬.৫ শতাংশ ডিসেম্বর মাসে নির্বাচন চায়।
শনিবার (৮ মার্চ) প্রকাশিত ‘জনগণের নির্বাচন ভাবনা’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জুন ও ডিসেম্বরের মধ্যে গ্রামাঞ্চলের মানুষ জুন মাসে বেশি নির্বাচন চায়। চলতি বছরের জুন মাসে গ্রামাঞ্চলের ৩৪.৪১ শতাংশ এবং শহরাঞ্চলের ২৩.৯৫ শতাংশ মানুষ নির্বাচন চায়। অন্যদিকে, ডিসেম্বর মাসে শহর ও গ্রাম উভয় অঞ্চলের সমানসংখ্যক মানুষ নির্বাচন চেয়েছেন। শহরাঞ্চলে ২৬.৪৬ শতাংশ ও গ্রামাঞ্চলে ২৬.৫৮ শতাংশ মানুষ ডিসেম্বরে নির্বাচন চান।
এছাড়া, ২০২৬ সালের জুন মাসে ৭.৯ শতাংশ, ডিসেম্বরে ৬.৬ শতাংশ এবং ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের পর ১০.৯ শতাংশ মানুষ নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে।
গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন ইননোভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রুবাইয়াত সারওয়ার। তিনি জানান, দেশের আটটি বিভাগের ৬৪ জেলার মোট ১০,৬৯৬ জনের মতামতের ভিত্তিতে এই জরিপ পরিচালিত হয়। জরিপটি ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ পর্যন্ত পরিচালিত হয়, যেখানে ৭১ শতাংশ গ্রামাঞ্চল এবং ২৯ শতাংশ শহরাঞ্চলের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪৫ শতাংশ নারী ছিলেন।
গবেষণা প্রতিবেদনে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এতে দেখা যায়, ৬৯.৬ শতাংশ মানুষ মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের দাবি জানায়।
এছাড়া, ৪৫.২ শতাংশ আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, ২৯.১ শতাংশ কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, ২১.৮ শতাংশ সরকারি পরিষেবায় দুর্নীতি হ্রাস, এবং ২০.২ শতাংশ নির্বাচনবান্ধব পরিবেশ তৈরির দাবি জানিয়েছে।
৯.৩ শতাংশ মানুষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সংস্কার, রাজনৈতিক সংস্কার চায়, এবং ৫.৩ শতাংশ সাংবিধানিক সংস্কারের পক্ষে মত দিয়েছে। গবেষণায় উঠে এসেছে, ভবিষ্যৎ সরকারের কাছেও জনগণ একই ধরনের প্রত্যাশা করছে।
ইননোভিশনের গবেষণায় ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন নিয়েও বিশ্লেষণ করা হয়। এতে দেখা যায়, মোট ৪৯.৪ শতাংশ মানুষ অন্তত একবার ভোট দিয়েছে, কিন্তু ৩৯.৪ শতাংশ মানুষ তিনটি নির্বাচনের একটিতেও ভোট দেয়নি। এছাড়া, ১১.২ শতাংশ নতুন ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
ভোটের সিদ্ধান্ত গ্রহণে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর বাইরেও অন্যান্য বিষয় প্রভাব ফেলেছে। গবেষণায় দেখা যায়, ২১.৬ শতাংশ মানুষ স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাংগঠনিক কার্যক্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। এছাড়া, ২০.৫ শতাংশ ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক আদর্শ, ১৮.৬ শতাংশ নির্বাচনী ইশতেহারে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং ১৬.৪ শতাংশ জুলাই অভ্যুত্থানের সঙ্গে আদর্শিক অবস্থানের কারণে প্রভাবিত হয়েছে।