পাচার করা টাকা ফেরানোর প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে সরকার বিশেষ আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সোমবার (১০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘পাচার করা টাকা কীভাবে আনা যায়, সেটি ত্বরান্বিত করার জন্য একটি বিশেষ আইন খুব শিগগিরই করা হবে। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই আইন চূড়ান্ত হবে।’
প্রেস সচিব জানান, পাচার হওয়া অর্থ উদ্ধারে শুরু থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সক্রিয় রয়েছে। তিনি বলেন, "প্রফেসর ইউনূস প্রথম থেকেই বলে আসছেন যে, এটি বাংলাদেশের মানুষের টাকা। তাই এটি আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।" এ লক্ষ্যেই গত সেপ্টেম্বরে ১১ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়, যার নেতৃত্বে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর।
টাকা ফেরানোর প্রচেষ্টার অগ্রগতি নিয়ে সোমবার অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা নিজেই সভাপতিত্ব করেন। এ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, এই বিষয়ে প্রতি মাসে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের পর আরও একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, পাচারকৃত অর্থ ফেরানোর জন্য সরকার আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ল ফার্মের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। ইতোমধ্যে ২০০টি ল ফার্মের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রায় ৩০টি ল ফার্ম চূড়ান্ত করা হবে। তিনি বলেন, "এই আইনের মাধ্যমে ল ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করা সহজ হবে।"
বৈঠকে এনবিআর চেয়ারম্যান উল্লেখ করেন, অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে পড়াশোনার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করছে। এক কেসে দেখা গেছে, শুধুমাত্র টিউশন ফি বাবদ ৪০০-৫০০ কোটি টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এ ধরনের মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।
ব্রিফিংয়ে উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি উপস্থিত ছিলেন।
সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ দেশ থেকে অর্থ পাচার রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :