শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে রাজি হন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শেখ হাসিনা দেশের অপূরণীয় ক্ষতি করে গেছেন। এটি ছিল সম্পূর্ণরূপে বিধ্বস্ত একটি দেশ, আরেকটি গাজার মতো। তবে এতে কোনো ভবন ধ্বংস হয়নি। বরং পুরো প্রতিষ্ঠান, নীতি, মানুষ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ধ্বংস হয়ে গেছে।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস কথা বলেন শেখ হাসিনার শাসনামল নিয়েও। তিনি বলেন, হাসিনার শাসনামলে কোনো সরকার ছিল না, ছিল দস্যুদের একটি পরিবার। সরকারপ্রধানের যেকোনো আদেশই তখন সম্পন্ন করা হতো। কেউ সমস্যা তৈরি করছে? তাকে উধাও করে দাও। নির্বাচন করতে চান? তারাই নিশ্চিত করতো আপনি যেন সেই আসনে জয়ী হন।
আবার টাকার দরকার হলেও সে ব্যবস্থা তাদের (হাসিনা সরকার) কাছে ছিল বলে জানান প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ব্যাংক থেকে তারা এক মিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে দিতো, যা আপনাকে কখনোই ফেরত দিতে হবে না।
সাক্ষাৎকারে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতে শেখ হাসিনার আশ্রয় প্রসঙ্গেও কথা বলেন।
তিনি বলেন, ভারত হাসিনাকে আতিথ্য দিলে তা সহ্য করা হবে। কিন্তু দেশকে আগের অবস্থায় নেওয়ার জন্য প্রচার চালাতে ভারতকে একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া বিপজ্জনক। এটি দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলে।
এদিকে বাংলাদেশে হাসিনার শাসনামল স্বৈরাচার, সহিংসতা এবং দুর্নীতির অভিযোগে ভরপুর ছিল বলে জানিয়েছে গার্ডিয়ান। যার সমাপ্তি ঘটে জুলাই ও আগস্ট মাসে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের মাধ্যমে।
জাতিসংঘের মতে, ওই সময় বাংলাদেশে সরকারবিরোধী আন্দোলনে এক হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে। এরপর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
আপনার মতামত লিখুন :