বাংলাদেশ থেকে বিদেশে কাজ করতে যাওয়া নারী শ্রমিকদের সংখ্যা ক্রমাগত কমছে। বিশেষত, ২০২২ সালের কোভিড-১৯ সংক্রমণের পর থেকে গত তিন বছরে বাংলাদেশি নারী শ্রমিকদের বিদেশ যাত্রার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বিশেষ করে, সৌদি আরবের মতো গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে যাওয়ার হারও দুই বছর ধরে কমেছে।
বাংলাদেশ জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী এসব তথ্য জানা যায়।
২০২৪ সালের প্রথম দুই মাসে মোট ১০,৩৬১ জন নারী শ্রমিক বিদেশ গিয়েছেন, যা গত বছরের তুলনায় কম। গত বছর, ২০২৩ সালে ৬১,১৫৮ জন এবং ২০২২ সালে ১,০৫,৪৬৬ জন নারী বিদেশ গিয়েছিলেন। ২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর ১ লাখের ওপর নারী শ্রমিক বিদেশ যেতেন, কিন্তু কোভিড পরবর্তী সময়ে এ সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমে যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশের নারীদের জন্য পরিস্থিতি আর আগের মতো অনুকূল নেই। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে, পাশাপাশি ভাষাগত এবং দক্ষতার অভাবও সমস্যা সৃষ্টি করছে। সৌদি আরব এখন দক্ষিণ আফ্রিকার দেশগুলো থেকে নারী শ্রমিক নিচ্ছে, ফলে বাংলাদেশের শ্রম বাজার আরও সংকুচিত হচ্ছে।
তবে, পাকিস্তান, হংকং, জাপান, ইতালি ও ব্রুনাইয়ের মতো নতুন গন্তব্যগুলোতে কিছু নারী শ্রমিকের যাত্রা বেড়েছে। বিশেষত, পাকিস্তানে গত দুই মাসে ৪০ জন নারী গেছেন, যা গত ২০ বছরে সর্বোচ্চ। হংকং ও জাপানে নারী শ্রমিকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, যেখানে তারা বেশিরভাগই শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষিত।
বিশ্বব্যাপী শ্রমবাজারের পরিবর্তন এবং নিরাপত্তা ও দক্ষতার বিষয়গুলো নিয়ে পুনরায় ভাবনা-চিন্তা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। বিদেশি বাজারের জন্য বাংলাদেশের নারীদের প্রণোদনা এবং প্রস্তুতি বাড়ানো গেলে, পরবর্তী সময়ে বিদেশে কর্মসংস্থানের সংখ্যা পুনরায় বাড়তে পারে।
আপনার মতামত লিখুন :