‘এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতির নির্দেশ’

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ০৮:২৯ পিএম

‘এলডিসি থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতির নির্দেশ’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস আজ উপদেষ্টা পরিষদের সভায় যোগদান করেন। ছবি: সংগৃহীত

স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন সরকার প্রধানের প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

এক ব্রিফিংয়ে তিনি জানান, উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ২০২৬ সালেই এলডিসি থেকে উত্তরণ করবে। এজন্য সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক মর্যাদা আরও বৃদ্ধি পাবে।

২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করবে। অন্তর্বর্তী সরকার এর আগে জানিয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে পরিসংখ্যান নিয়ে কারসাজি করা হয়েছিল এবং উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের সিদ্ধান্ত পুনর্মূল্যায়ন করা হতে পারে।

এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আনিসুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছিলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের সময় পেছানোর বিষয়টি সরকার বিবেচনা করছে। তবে এর একদিন পরই সরকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় যে নির্ধারিত সময়েই উত্তরণ সম্পন্ন হবে।

১৯৭৫ সাল থেকে বাংলাদেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় ছিল। তবে ২০১৮ সালেই জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জনের স্বীকৃতি দেয়। মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ঝুঁকি সূচকের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ধারাবাহিক উন্নতি করেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে দেশের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২,৭৪৯ মার্কিন ডলার, যা উন্নয়নশীল দেশের যোগ্যতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় সীমার চেয়ে বেশি।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৬তম বৈঠকের ৪০তম প্লেনারি সভায় ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ করা হয়।

এলডিসি থেকে উত্তরণের ফলে বাংলাদেশ ইউরোপের রপ্তানি বাজারে শুল্ক ও কোটামুক্ত সুবিধা হারাবে। তবে দেশটি এরই মধ্যে নতুন বাণিজ্য কৌশল নিয়ে কাজ করছে, যাতে উত্তরণের পরও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বাণিজ্য সুবিধা বজায় রাখা যায়।

জাতিসংঘের ই-গভর্নমেন্ট সার্ভে ২০২৪ অনুযায়ী, বাংলাদেশ গত বছর ১৯৩টি দেশের মধ্যে ১০০তম অবস্থানে ছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ১১ ধাপ অগ্রগতি। মানব উন্নয়ন সূচকেও বাংলাদেশের ধারাবাহিক অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) জানিয়েছে, এলডিসি থেকে উত্তরণে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যা ধারাবাহিক তিনটি মূল্যায়নে সব সূচকে উত্তীর্ণ হয়েছে।

আরবি/একে

Link copied!