আছিয়ার সঙ্গে কি হয়েছিলো সেই রাতে, কেঁদে কেঁদে জানালেন মা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: মার্চ ১৩, ২০২৫, ০৯:৫১ পিএম

আছিয়ার সঙ্গে কি হয়েছিলো সেই রাতে, কেঁদে কেঁদে জানালেন মা

ছবি: সংগৃহীত

মাগুরায় আলোচিত ধর্ষণের শিকার ৮ বছরের শিশুটি পৃথিবীর মায়া ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছে। শিশুটির মৃত্যুতে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে দেশবাসী। বুকের মানিককে হারিয়ে বাকরুদ্ধ তার মা। বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় একে একে দুবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয় শিশুটির। এরপর দুপুরে তৃতীয়বার কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের পর তার হৃদস্পন্দন থেমে যায়। অবশেষে চিরমুক্তির পথ ধরে সে বিদায় নেয়।

মায়ের অবুঝ মন যেন মানে না। গত কয়েক দিন ধরেই নাড়ি ছেঁড়া ধনের জীবন নিয়ে শঙ্কায় ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ছোট মেয়েকে হারিয়ে অনেকটা দিশেহারা তিনি।
শিশুটির মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালের মেঝেতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিলাপ করছিলেন তার মা। তিনি বলেন, ‘আমার মণি যেভাবে মরছে, আমার মণি যেভাবে গলায় 

ফাঁস দিয়ে মরছে, আমি তারও (অপরাধীর) ফাঁস দিয়ে বিচার চাই। (তার) এ রকম মৃত্যু চাই আমি, আমার মণির যেমন বেলেড দিয়ে কাটছে, গলায় ফাঁস দেসে, ঠিক সেরকম বিচার চাই আমি আপনাদের কাছে। ওরে যেন ওইরকম ফাঁসি দিয়ে মারে। ও রকম যেন ওরে বেলেড দিয়ে কাটে। আমার মেয়েটারে যে কষ্ট দিছে না? আমি তারেও এরকম দেখতে চাই।’

সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে শিশুটির মা বলেন, ওর আপার বাড়িতে যাওয়ার পর, ওর আপাকে ধরে মেরেছিল। তখন আছিয়া বলেছিল, সে বাড়িতে গিয়ে সব বলে দেবে। এরপরই সেই রাতে এ রকম ঘটনা ঘটেছে। বড় মাইয়াটারে ইচ্ছা মতো মেরে আলাদা ঘরে থুইয়া দিছিল। পরে রাত ১১টার দিকে আমার কাছে ফোন দিয়ে বলসে আমার মণি অসুস্থ। আমি গিয়ে দেখি সদর হাসপাতালে ভর্তি করাইছে। তারে রাইখে পলাইছে ওই মহিলা।

গত ৬ মার্চ মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়িতে বেড়াতে এসে ধর্ষণের শিকার হয় শিশুটি। প্রথমে তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। এরপর ৭ মার্চ রাতে তাকে ভেন্টিলেশনে নেয়া হয়।

গত ৮ মার্চ সন্ধ্যায় সংকটাপন্ন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শিশুটির চিকিৎসায় সিএমএইচের প্রধান সার্জনকে প্রধান করে আটজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল।

ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে চার জনের নামে মামলা করেন। ধর্ষণের অভিযোগে শিশুটির ভগ্নিপতি সজীব (১৮), সজীবের ভাই রাতুল (১৭), তাদের বাবা হিটু মিয়া (৪২) ও মা জাবেদা বেগমকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলার চার আসামির মধ্যে তিনজন পুরুষের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য এরইমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকালে তিন আসামিকে মাগুরা থেকে ঢাকায় সিআইডির ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবে আনা হয়। একই সঙ্গে শিশুটির ডিএনএ নমুনাও জমা দেয়া হয়।
 

আরবি/একে

Link copied!