জাতীয় জাদুঘরে এক প্রকাশনা অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমরা অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছ, কিন্তু আরও বড় দায়িত্ব পালন বাকি আছে। একাত্তরে আমরা যে সুযোগ নষ্ট করেছি, তোমরা সেই সুযোগটা নষ্ট হতে দিও না। তোমরা আমাদের জুলাইয়ের নেতা ছিলে, আরও অন্তত পাঁচ-দশ বছর আমাদের নেতা থেকে রাষ্ট্রকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে দিও। এটাই আমার প্রত্যাশা।’
শনিবার (১৫ মার্চ) জাতীয় জাদুঘরে অন্তর্বর্তী সরকারের যুব, ক্রীড়া ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার লেখা ‘জুলাই: মাতৃভূমি অথবা মৃত্যু’ বইয়ের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের উদ্দেশে আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি তোমাদের সতর্ক করে দিচ্ছি, বাবা, অনেক কষ্ট ও অপেক্ষার পর আমরা তোমাদের পেয়েছি। তোমরা একটি নতুন রাষ্ট্রের স্বপ্ন ও সুযোগ আমাদের সামনে হাজির করেছ। নব্বই সালেও এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। একাত্তরের পর এই প্রথমবার এমন সুযোগ এসেছে। এ রকম সুযোগ আবার হয়তো ৫০ বছর পর আসবে। তোমরা অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছ, কিন্তু আরও বড় দায়িত্ব পালন বাকি আছে। একাত্তরে আমরা যে সুযোগ নষ্ট করেছি, তোমরা সেই সুযোগ নষ্ট হতে দিও না। তোমরা আমাদের জুলাইয়ের নেতা ছিলে, আরও অন্তত পাঁচ-দশ বছর আমাদের নেতা থেকে রাষ্ট্রকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছে দিও।’
আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘জুলাই শুধু বিয়োগান্তক গল্প নয়, এটি বিজয় ও সাহসেরও গল্প। প্রত্যেকেরই একটা গল্প আছে। কেউ শহীদ হয়েছেন, কেউ আহত হয়েছেন, কেউ কষ্ট বুকে নিয়ে বেঁচে আছেন। সবার অভূতপূর্ব আত্মদানের মধ্য দিয়ে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, সেটিকে এগিয়ে নিতে হবে। তাহলেই জুলাইয়ের আত্মদান ও সব স্তরের মানুষের সামষ্টিক প্রত্যাশা সার্থক হবে। রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সংস্কার করতে হবে।’
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের লেখা বই সম্পর্কে আসিফ নজরুল বলেন, ‘এই বইয়ের বিশেষত্ব হলো, এর ভাষা অত্যন্ত স্বচ্ছন্দ ও প্রাঞ্জল। বইয়ের মধ্যে গল্প আছে, সাহসের বর্ণনা আছে, কষ্টেরও বর্ণনা আছে। আন্দোলনের সময়কার অনেক উদ্ভাবনী আইডিয়ার কথা এতে উল্লেখ আছে। সম্মিলিত অভিজ্ঞতার অভূতপূর্ব বর্ণনাও পাওয়া যাবে এই বইয়ে। বইটিতে আসিফ মাহমুদ অকপটে অনেক কিছু বলেছেন। তবে এটি সংক্ষেপে লেখা হয়েছে, কিছু ঘটনার উল্লেখ থাকলেও চরিত্রের বিস্তারিত বিবরণ নেই।’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমার জানামতে, এই বইয়ের একটি তথ্যও মিথ্যা নয়। কিন্তু আমাদের সমাজে অবিশ্বাস্য মিথ্যার চর্চা শুরু হয়েছে।... জুলাই অভ্যুত্থানের অগ্রভাগের নেতাদের নিয়ে যখন অবাধ ও জঘন্য মিথ্যাচার চলে, মনে রাখতে হবে এটি জুলাইয়ের শত্রুদের কাজ। এই মিথ্যাচারকে উন্মোচিত করতে হবে।’
আপনার মতামত লিখুন :