ঢাকা রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫

কে এই সন্ত্রাসী সাজ্জাদ?

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৫, ০৭:৩২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত

চলতি বছরের শুরুর দিকে ফেসবুক লাইভে এসে চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে ‘পেটানোর’ হুমকি দেন সাজ্জাদ। এ ঘটনার পর চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) তার বিরুদ্ধে পুরস্কার ঘোষণা করে। এরপর তিনি গা ঢাকা দেন। তবে অবশেষে, গত শনিবার (১৫ মার্চ) রাতে রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) বিশেষ টিম।

ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তারের পর তার স্ত্রী তামান্না শারমিন ফেসবুক লাইভে আসেন। সেই লাইভ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়।

ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি, বান্ডিল বান্ডিল টাকা দিয়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।’

ভিডিওতে তামান্না শারমিন আরও বলেন, ১৭ মামলার আসামি সাজ্জাদ হোসেনকে ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে জামিনে ছাড়িয়ে আনবেন।

তিনি প্রতিপক্ষকে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পালানোর পালা শুরু। খেলা শুরু হবে এখন।’

চট্টগ্রামের হাটহাজারী, বায়েজিদ বোস্তামী, চান্দগাঁও ও পাঁচলাইশ এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ‘ছোট সাজ্জাদ’ হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজি ও জোড়া খুনসহ ১৫টিরও বেশি মামলার আসামি।

হাটহাজারী উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. জামালের ছেলে সাজ্জাদ চট্টগ্রামের আলোচিত ‘এইট মার্ডার মামলার’ মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী খানের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। বিদেশে অবস্থানরত সাজ্জাদ আলী খান চাঁদাবাজি ও হত্যাকাণ্ডের জন্য ছোট সাজ্জাদকে ব্যবহার করতেন।

দুই যুগ আগে চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতুর সংযোগ সড়কে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মাইক্রোবাস আটকে গুলি চালিয়ে আটজনকে হত্যা করেছিলেন বড় সাজ্জাদ। তার অনুসারী হিসেবে বায়েজিদ ও চান্দগাঁও এলাকায় চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছিলেন ছোট সাজ্জাদ।

২০২৩ সালের ২৮ জানুয়ারি বায়েজিদ বোস্তামী থানার অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কে প্রকাশ্যে গুলি করে মাসুদ কায়সার ও মোহাম্মদ আনিসকে হত্যা করা হয়। একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর চান্দগাঁও থানার অদূরপাড়া এলাকায় ব্যবসায়ী আফতাব উদ্দিন তাহসীনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ৫ জুলাই বায়েজিদ থানার বুলিয়াপাড়া এলাকায় বাসায় ঢুকে গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। এছাড়া, ২৭ অক্টোবর চান্দগাঁও হাজীরপুল এলাকায় ঠিকাদার মো. হাসানের বাসায় গুলি করা হয় এবং ৫ ডিসেম্বর অক্সিজেন মোড়ে পুলিশের ওপর গুলি চালিয়ে পালিয়ে যান সাজ্জাদ।

ঢাকায় এক সহযোগীসহ ঘোরাঘুরি করার সময় চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি সাজ্জাদকে চিনতে পারেন। পরে স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেন। বর্তমানে পুলিশ সাজ্জাদকে চট্টগ্রামে নিয়ে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আশা করছে, এই গ্রেপ্তারের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে।