শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ইমন ওরফে ইমনের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হেজাজের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গত ১১ মার্চ যৌথ বাহিনী রাজধানীর জিগাতলার টালি অফিস রোড এলাকা থেকে তাকে আটক করে এবং মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করে। পরে, তার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পুলিশ পরদিন আদালতে পাঠায়। অসুস্থতার কারণে আদালত তাকে জামিন প্রদান করে। জামিন পাওয়ার পর হেজাজকে ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, যেখানে শনিবার বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ধানমন্ডি থানার ওসি আলী আহমেদ মাসুদ জানান, শনিবার ইফতারের পর বাদ মাগরিব ধানমন্ডির তাকওয়া মসজিদে তার জানাজা হওয়ার কথা ছিল। তবে পুলিশ খবর পেয়ে মসজিদ থেকে লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।
তিনি বলেন, ‘তার মৃত্যু রহস্যজনক মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।’
এ বিষয়ে ডিএমপির ধানমন্ডি জোনের সহকারী কমিশনার তারিক-উজ-জামান বলেন, ‘আমরা খবর পাওয়ার পরই লাশের ময়নাতদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সে কারণেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে।’
তাকওয়া মসজিদের একজন মুসল্লি জানান, জানাজার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর ধানমন্ডি থানার ওসি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জানান যে মৃত্যুটি অস্বাভাবিক এবং ময়নাতদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। ফলে জানাজা না করেই লাশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
উল্লেখ্য, হেজাজ হাজারীবাগ, জিগাতলা, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ও কলাবাগান এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ইমনের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড হিসেবে পরিচিত ছিলেন। সম্প্রতি মোহাম্মদপুর ও হাজারীবাগের বেরিবাঁধ এলাকায় সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোর মধ্যে বড় একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দেন তিনি।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি ধানমন্ডির ১৫ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, জেল থেকে ইমন বাহিনীর চাঁদাবাজির নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করতেন হেজাজ। চার বছর আগে চাঁদাবাজির অভিযোগে ধানমন্ডি থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল।
৫ আগস্টের পর ইমন জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর হেজাজের গ্রুপ মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি ও হাজারীবাগ এলাকায় পুনরায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। প্রকাশ্যে চলতে থাকে চাপাতি বাহিনীর দোর্দণ্ড প্রতাপ। গত মাসে এক ট্যানারি ব্যবসায়ীকে চাঁদার দাবিতে অপহরণ করে হেজাজের গ্রুপ, পরে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিয়ে তাকে মুক্তি দেয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :