সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক নিয়োগ সংক্রান্ত বিতর্কের উত্তেজনা যখন তুঙ্গে, তখনই নতুন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে ঘিরে একের পর এক বিতর্ক প্রকাশ্যে আসছে।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিকল্পনা শাখা থেকে জারি করা একটি প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মঞ্জুর আলীকে ‘রেজিলিয়েন্ট আরবান অ্যান্ড টেরিটোরিয়াল ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ইউ.টি.ডি.পি)’-এর প্রকল্প পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পের ব্যয় প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে প্রকল্প ঋণের পরিমাণ আনুমানিক চার হাজার তিনশ কোটি টাকা।
প্রজ্ঞাপনটি প্রকাশ্যে আসার পরপরই একের পর এক বিতর্ক সামনে আসতে শুরু করেছে। বিশেষ করে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ সংক্রান্ত নিয়মাবলীর শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি শর্ত হলো—প্রস্তাবিত যে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার ছয় মাসের অধিক চাকরির মেয়াদ না থাকলে, সে ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালক পদে জ্যেষ্ঠতার বিবেচনা থাকলেও নিয়োগ দেওয়া যাবে না। অভিযোগ উঠেছে যে, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ মঞ্জুর আলীর ক্ষেত্রে এই শর্ত উপেক্ষা করেই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
একটি সূত্র জানায়, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ মঞ্জুর আলী স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরে সহকারী প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন ২৬ নভেম্বর ১৯৯২ সালে। সে হিসাবে চলতি বছরের শেষের দিকেই তার পিআরএল (অবসরোত্তর ছুটি) জারির সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে, পাঁচ বছর মেয়াদী একটি প্রকল্পের জন্য মাত্র ছয় মাস চাকরির মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও তাকে প্রকল্প পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কেউই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মঞ্জুর আলীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। একইভাবে, ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের সাথেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের চলমান বিতর্ক এবং অনিয়ম নিয়ে বারবার সংবাদ প্রকাশ্যে আসার বিষয়ে ড. বদিউল আলম মজুমদারের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনিয়ম এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। ছাত্র কিংবা সমন্বয়কদের মধ্যে কারো বিরুদ্ধে বারবার দুর্নীতির অভিযোগ ওঠা মানে বর্তমান সরকারের প্রতিও জনগণের আস্থা কমে যাওয়া। আমি আশা করবো, প্রধান উপদেষ্টা মহোদয় এসব বিষয়ের সার্বিক দিক গভীরভাবে পর্যালোচনা করবেন।’