তিন দিনের উচ্চ পর্যায়ের সফরে আগামী ২২ এপ্রিল বাংলাদেশে আসতে পারেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য নেশন।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর এটি হবে ঢাকায় কোনো শীর্ষ পাকিস্তানি মন্ত্রীর প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসহাক দারের এই সফর ২২ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। এই তিন দিনের সফরে তিনি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারেন।
এ ছাড়া, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গেও ইসহাক দারের বৈঠক হবে। ইসহাক দার বাংলাদেশের উপদেষ্টা পরিষদের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও বৈঠক করতে পারেন বলে জানিয়েছে সূত্রগুলো। এসব বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সব দিক নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হবে।
সফরকালে উভয় দেশের মধ্যে একাধিক সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার মূল লক্ষ্য হবে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করা।
ইসহাক দারের বাংলাদেশ সফরের প্রাথমিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে পাকিস্তানের অতিরিক্ত পররাষ্ট্রসচিব (এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চল) রাষ্ট্রদূত ইমরান আহমেদ সিদ্দিকী বাংলাদেশ সফর করেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি পণ্য আমদানির ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়েছে। ইসহাক দার সে সময় বাংলাদেশকে ‘ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ’ আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন, ‘পাকিস্তান ঢাকাকে সব ধরনের সহায়তা দেবে।’
গত বছরের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর, পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ২০১২ সালের পর এটিই প্রথম কোনো পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর।
বিশ্লেষকদের মতে, ইসহাক দারের এই সফর বহুদিন পরে দুই দেশের সম্পর্ক উষ্ণ হওয়ারও ইঙ্গিত দিচ্ছে।
গত বছরের আগস্টের রক্তক্ষয়ী গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নত হয়েছে। ১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে একাধিকবার মত বিনিময় হয়েছে এবং দুই দেশের মধ্যে সরাসরি সমুদ্রপথে বাণিজ্য শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে সর্বশেষ পাকিস্তানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে ঢাকা সফর করেন হিনা রাব্বানি খার। শেখ হাসিনার ১৫ বছরের শাসনামলে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক বেশ তিক্ত ছিল। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেখ হাসিনা সরকার তাতে সাড়া দেয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :