বাংলাদেশের রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোতে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ নতুন কিছু নয়। গত বছর আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলোতে গুজব ছড়ানোর জোয়ার ওঠে।
গতকাল মধ্যরাতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে জানান, শর্তসাপেক্ষে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনে একাধিক রাজনৈতিক দল রাজি হয়েছে। হাসনাত আব্দুল্লাহর সেই পোস্টের পর দেশজুড়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলে কর্মসূচী পালন করে কয়েকটি সংগঠন। তাছাড়া দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সকাল থেকেই সেনাবাহিনী বেশ সড়ব অবস্থানে।
তবে, এ ক্ষুদ্র ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ফের গুজব ছড়াচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো। আজ শুক্রবার (২২ মার্চ) ভারতীয় এক গণমাধ্যমে ইউটিউবে এক প্রতিবেদনে তারা দাবি করেন, ‘গৃহযুদ্ধে গোটা বাংলাদেশ? হাসিনাকে ঢোকাতে আর্মি নামালেন সেনাপ্রধান ওয়াকার।’

এছাড়াও সাম্প্রদায়িক অপতথ্যের এই ক্যাম্পেইনে ভারতীয় গণমাধ্যমও রেখেছে ভূমিকা। অন্তত ১০টি ঘটনায় ভারতের গণমাধ্যমে বাংলাদেশকে জড়িয়ে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই), এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, জি নিউজ, আজতক, রিপাবলিক বাংলা’র মতো মূলধারার সংবাদমাধ্যমগুলোতে অপতথ্যের প্রচার করা হয়েছে।
এদিকে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সময়ে গত বছরের আগস্ট থেকে ভারতীয়দের অপতথ্য প্রচারের হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিদায়ের পর সরকারবিহীন পরের তিনদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে রাজনৈতিক হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। হামলা হয় বিভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের বাড়ি এবং স্থাপনায়ও। এসব ঘটনাবলির মধ্যেই সাম্প্রদায়িক ভুল তথ্য এবং অপতথ্যের ব্যাপক প্রচার চালানো হয়েছে ভারতীয় বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট ও সংবাদমাধ্যমে। গত বছর ভারতীয়দের ছড়ানো যে ১৪৮টি অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার, তার মধ্যে ১১৫টিই সাম্প্রদায়িক অপতথ্য। গেল বছর সাম্প্রদায়িক অপতথ্যের প্রচারের বড় এক মাধ্যম হয়ে ওঠে এক্স। আগস্ট মাসেই এক্সে ৫১টি সাম্প্রদায়িক অপতথ্য শনাক্ত করে রিউমর স্ক্যানার।