ঢাকা বুধবার, ২৬ মার্চ, ২০২৫

শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে শোক জানাল ইউনিসেফ

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ২৩, ২০২৫, ০৬:১৭ পিএম
শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে শোক জানাল ইউনিসেফ
ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশু আছিয়ার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ। একই সঙ্গে নারী ও শিশুদের ওপর সহিংসতার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতি অঙ্গীকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে সংস্থাটি।

রোববার (২৩ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে শিশুদের ওপর, বিশেষ করে কন্যাশিশুদের ওপর যৌন সহিংসতার খবর উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় আমি গভীরভাবে আতঙ্কিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো যেসব জায়গায় শিশুদের সুরক্ষিত পরিবেশে বেড়ে ওঠার কথা, সেসব জায়গাসহ অন্যত্র শিশু ধর্ষণ ও শিশুদের ওপর যৌন সহিংসতার ভয়ানক ঘটনাগুলো সম্প্রতি যেভাবে বেড়েছে, তা নিয়ে আমি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, মাগুরার আট বছরের শিশুটির মর্মান্তিক মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। বাংলাদেশে শিশুরা, বিশেষ করে কন্যাশিশুরা, কীভাবে তাদের মৌলিক অধিকারগুলো ও নিরাপত্তার গুরুতর লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে, সেটা ওই শিশুর মৃত্যু আমাদের ভয়ঙ্করভাবে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দুঃখজনকভাবে, এই ছোট শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি শিশুদের ওপর যেসব ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে সেগুলোর নিছক একটি ঘটনা মাত্র।

ইউনিসেফের নিরীক্ষণ অনুযায়ী, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া শিশুদের সংখ্যা বড় বেদনাদায়ক ও উদ্বেগকজনক।

২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত সময়ে সংবাদমাধ্যম ও স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনগুলো শিশু ধর্ষণের প্রায় ৫০টি ঘটনা রেকর্ড করেছে। আর এই প্রবণতা যেন দিন দিন আরও ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে— শুধু ১০ মার্চ (সোমবার) এক দিনে সাতটি শিশু নিহত হয়েছে এবং ছয়টি শিশুর সঙ্গে সহিংসতার ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে। 

এসব পরিসংখ্যান কেবল নিছক কোনও সংখ্যা নয়; এরা বিপন্ন জীবনের কথা বলে, নির্যাতনের শিকার হয়ে বেঁচে যাওয়া শিশুরা যে বিরাট মানসিক অভিঘাতের শিকার হয়, তার কথা বলে। ভুক্তভোগী পরিবার ও কমিউনিটিগুলোর বয়ে বেড়ানো অকল্পনীয় কষ্টের অভিজ্ঞতা আমাদের সামনে তুলে ধরেছে।

ইউনিসেফের হিসেবে, বিশ্বে বর্তমানে বেঁচে আছেন এমন প্রতি আট নারী ও শিশুর মধ্যে একজন ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই ধর্ষণ বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। আর বাংলাদেশে সমীক্ষায় দেখা গেছে, এসব অপরাধী প্রায়ই ভুক্তভোগীদের পরিচিত হয়ে থাকেন। এই সংকটের প্রেক্ষিতে সরকার অপরাধীদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনার যে নির্দেশ দিয়েছে সেটাকে স্বাগত জানিয়েছে সংস্থাটি।

রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর সহিংসতার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ‘শূন্য সহিষ্ণুতার’ (জিরো টলারেন্স) নীতির প্রতি অঙ্গীকারকে সাধুবাদ জানাচ্ছে ইউনিসেফ। পাশাপাশি অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো থেকে ক্ষতিকর আধেয় (কনটেন্ট) অপসারণে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) প্রচেষ্টারও প্রশংসা করছি আমরা।