রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫

ছুটিতে রাবির হল খোলা রাখার দাবি, ধস্তাধস্তিতে আহত ১

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৫, ০৩:৪৮ পিএম

ছুটিতে রাবির হল খোলা রাখার দাবি, ধস্তাধস্তিতে আহত ১

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি উপলক্ষে আগামীকাল ২৮ মার্চ থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত এক সপ্তাহ ‍‍‘ভ্যাকেন্ট‍‍’ থাকবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) হলগুলো।

তবে শিক্ষার্থীরা হলগুলো খোলা রাখার দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।

এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সাথে প্রক্টরের উচ্চবাচ্য ও ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

এতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাবি শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষক কোয়ার্টার খোলা রেখে হল বন্ধ কেন?‍‍’, ‍‍‘আবাসিক হল বন্ধ করা চলবে না‍‍’, ‍‍‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল কী বন্ধ‍‍’ প্রভৃতি প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন। 

প্রশাসন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল ১০টা থেকে কর্মসূচি পালন করছিল শিক্ষার্থীরা।দুপুর ১২টা বেজে গেলেও তাদের সাথে প্রশাসনের কেউ আলোচনা করতে আসেনি। পরে ১২টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব কার্যালয়ে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের প্রতি ‘ইতিবাচক’ কোনো মনোভাব না দেখিয়ে চলে যান। পরে আন্দোলনকারীরা ভবনের ফটক তালাবন্ধ করে কর্মসূচি চালিয়ে যান।

এতে ভবনের ভেতরে উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, উপ-উপাচার্যসহ উর্ধতন কর্মকর্তারা অবরুদ্ধ হয়ে যায়। পরে বেলা দেড়টার সময় প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান ঘটনাস্থলে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সারহে ধস্তাধস্তি করে ভবনে তালা খুলে অবরুদ্ধ কর্মকর্তাদের অবমুক্ত করেন।

মুক্ত হয়েই আন্দোলনকারীদের ওপর উচ্চবাচ্য করেন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসুদ। তবে এ ঘটনার পরেও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, আমাদের সাথে কোনো আলোচনা ছাড়া হল বন্ধের সিদ্ধান্ত, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে ভ্রুক্ষেপ না করা, প্রক্টরের হামলা এবং হল বন্ধের সিদ্ধান্তে অটল থাকা ফ্যাসিবাদী আচরণেরই অন্তর্ভুক্ত।

তবে হল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের আগে পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাব।

অন্যদিকে প্রশাসন বলছেন, শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা করতে এবং তাদের সংকট নিরসনে প্রশাসন কাজ করছে। তবে, প্রশাসন ভবন তালাবদ্ধ করে এ ধরনের কর্মসূচি সে কাজকে ব্যাহত করে। 

কর্মসূচির বিষয়ে শাখা ছাত্র ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি রাকিব হোসেন বলেন, ‍‍‘আমরা তৃতীয় দিনের মতো কর্মসূচি পালন করছিলাম।

এটা ছিল প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি। আমরা ভবনের ফটকে কর্মসূচিতে বসলে উপাচার্য স্যার ভবনের ভেতরে আমাদের শরীর ডিঙিয়ে যাচ্ছিলেন।

তবুও তিনি আমাদের সাথে কোনো কথা বলেননি। আমরা সহযোগিতামূলক আচরণ করলেও তারা কোনো সহযোগিতা করেনি।

এতে আমরা তালা মারতে বাধ্য হই। দেড়টার দিকে প্রশাসন এসে আমাদের সাথে ধস্তাধস্তি করে তালা ভাঙতে যায়।

এতে আমাদের একজন সহযোদ্ধা আহত হয় এবং আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেয় প্রক্টর। তবুও আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছি।‍‍’

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্যই মূলত প্রশাসন হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং এটা এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক বায়তুল মোকাদ্দেসুর রহমান। তিনি বলেন, ‍‍‘মূলত শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা কথা চিন্তা করেই আমরা হল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

আমাদের এ সিদ্ধান্ত এখন পর্যন্ত অপরিবর্তিত রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের বার বার বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা এ বিষয়টা বুঝতে পারছে না বলেই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে।‍‍’

কর্মসূচি পালনরত শিক্ষার্থীদের সাথে ধস্তাধস্তির বিষয়ে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের প্রত্যেকেরই পৃথক পৃথক সমস্যা থাকে। সে সংকট নিরসনে হল প্রাধ্যক্ষরা হলে থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি জানার চেষ্টা করেছেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একটি সভা করতেই প্রশাসনিক ভবনের যাচ্ছিল।

কিন্তু একদল আন্দোলনকারী ভবনে তালা দিয়ে আমাদের কাজ ব্যাহত করেছে। এ সময় আমি তালা খুলতে অনুরোধ করলেও তারা যখন খোলেনি তখন তাদের কাছে থেকে চাবি ছিনিয়ে নিতে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়েছে।‍‍’

আরবি/আবু

Link copied!