ঢাকা রবিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৫

ঈদের আগেই খুললো মিরপুর-দিয়াবাড়িসহ ২ সড়ক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ২৭, ২০২৫, ০৪:২৫ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাজধানীর মিরপুর ডিওএইচএস থেকে উত্তরা দিয়াবাড়ি এবং নতুন ১৮ ওয়ার্ড প্রকল্পের আওতায় উত্তরা আজমপুর কাঁচাবাজার থেকে চামুরখান পর্যন্ত সড়ক যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকালে এই দুই সড়কের উদ্বোধন করেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

সড়কগুলোর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে ডিএনসিসি প্রশাসক বলেন, "আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেসব এলাকায় জনদুর্ভোগ বেশি, সেগুলোকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করবো। সেই অনুযায়ী উত্তরা থেকে মিরপুর-১২ (মিরপুর ডিওএইচএস) যাওয়ার সড়কটি ছিল এক নম্বর অগ্রাধিকার। আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম রোজার মধ্যেই সড়কটির কাজ সম্পন্ন করবো। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ঈদের উপহার হিসেবে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করে উদ্বোধন করলাম। ঈদে অনেকে এখানে ঘুরতে আসবে, তাই মানুষ যেন নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারে, সেটি মাথায় রেখেই এই সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাস্তাটি জলাধারের উপর দিয়ে গিয়েছে। জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আমরা সাময়িকভাবে এটি দ্রুত নির্মাণ করেছি। ডিএনসিসির কর্মীদের নিরলস পরিশ্রমের ফলেই এটি সম্ভব হয়েছে। ভবিষ্যতে পানির প্রবাহ ঠিক রাখতে উঁচু ব্রিজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের সহযোগিতায় আমরা এই সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্মাণ করতে পেরেছি।’

নতুন ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ডিএনসিসি বর্তমানে ৩৬টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত, যার মধ্যে ১৮টি নতুন ওয়ার্ড যুক্ত হয়েছে। নতুন ওয়ার্ডগুলো মূলত গ্রাম অঞ্চল, যেখানে তেমন কোনো অবকাঠামো উন্নয়ন হয়নি। আমি দায়িত্ব নিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, ঢাকাকে একটি ন্যায্য শহরে পরিণত করবো। উন্নয়নের জন্য সেসব জায়গায় বেশি বিনিয়োগ করা হবে যেখানে প্রয়োজন বেশি। পূর্বে দেখা গেছে, প্রভাবশালী ও বিত্তশালী এলাকা বেশি উন্নত করা হয়েছে। কিন্তু আমি চাই, যেসব এলাকায় প্রকৃতপক্ষে উন্নয়ন দরকার, সেসব এলাকাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

প্রশাসক আরও বলেন, ‘নতুন ১৮টি ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি উন্নয়নের প্রয়োজন। তাই সেসব এলাকায় আমি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি। এয়ারপোর্ট থেকে দক্ষিণখান হয়ে পূর্ব-পশ্চিম সংযোগ সড়কের কাজ চলমান। আজমপুর কাঁচাবাজার থেকে চামুরখান ব্রিজ পর্যন্ত ৩.৬ কিলোমিটার প্রধান সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং আজ উদ্বোধন করা হলো। ঈদের পর এয়ারপোর্ট থেকে কাউলা সড়কের কাজও সম্পন্ন হবে।’

নতুন ১৮ ওয়ার্ডের চ্যালেঞ্জ নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই এলাকাগুলোতে আগে কোনো পরিকল্পনা ছিল না। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা আবাসনের ফলে রাস্তার জায়গা সংকুচিত হয়েছে। আমাদের কর্মীরা জনগণকে বুঝিয়ে তাদের বাড়ির সামনের জায়গা ছাড়তে অনুরোধ করেছেন, যাতে রাস্তা প্রশস্ত করা যায়। কিছুটা প্রশস্ত করা সম্ভব হয়েছে, তবে ভবিষ্যতে ৭০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রধান সড়কগুলোর মেরামত প্রায় শেষ হয়েছে। পাঁচ আগস্টের পর অনেক ঠিকাদার কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ায় কিছু প্রকল্পে বিলম্ব হয়েছে। তবে পিপিআর রুল অনুসরণ করে উন্নয়ন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। জনবলের অভাব থাকলেও আমাদের টিম নিরলস পরিশ্রম করছে। ঈদের পর বিভিন্ন ওয়ার্ডের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।’

উন্নয়নমূলক এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে ঢাকার যানজট নিরসন ও নাগরিক দুর্ভোগ কমানোর লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন।