লালমনিরহাটে মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ঢেকে রাখার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সংবাদ সম্মেলন পণ্ড হয়ে গেছে। তবে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশে প্রেস ব্রিফিং করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
শনিবার (২৯ মার্চ) সকাল ১১টায় লালমনিরহাট শহরের কলেজ রোডে বিজিবি ক্যাম্পের সামনে অবস্থিত ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মারক মঞ্চে’ এনসিপির সংবাদ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল। তবে সকাল ১০টায় একই স্থানে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিং করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তাদের সদস্যরা দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করেন, ফলে এনসিপির নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাধাগ্রস্ত হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মারক মঞ্চে সংবাদ সম্মেলন করতে না পেরে এনসিপির নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। তবে সেখানেও তাদের সংবাদ সম্মেলন সফল হয়নি।
এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) রাসেল আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ঢেকে রাখার প্রতিবাদে আমরা সংবাদ সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। কিন্তু কিছু চিহ্নিত দুষ্কৃতকারীর কারণে তা সম্ভব হয়নি।’ তিনি আরও দাবি করেন, তাদের দলের কর্মীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে এবং চরম অপমান করা হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
রাসেল আহমেদ আরও বলেন, ‘আমাদের দল এই ঘটনার বিষয়ে আগে থেকে কিছু জানত না। যারা এই কাজ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসন চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছে, কারণ তারা ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, চরমপত্র পাঠ, মুক্তিযোদ্ধাদের বিজয়ের উল্লাস এবং সাত বীরশ্রেষ্ঠদের প্রতিচিত্রসহ গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক অংশ ঢেকে দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘১৯৭১ এবং ২০২৪ সালের ঘটনাকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে জাতিকে বিভক্ত করার অপচেষ্টা চলছে। তবে ’৭১ ও ’২৪ কখনোই পরস্পরবিরোধী নয়।’
অন্যদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন লালমনিরহাট জেলা শাখার পক্ষ থেকে প্রেস ব্রিফিংয়ে হামিদুর রহমান বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের ম্যুরাল ঢেকে দেওয়ার বিষয়ে আমাদের কোনো পূর্বজ্ঞান ছিল না, এবং আমরা এ বিষয়ে কোনো দাবি তুলি নি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ’৫২ ও ’৭১-এর ইতিহাস অক্ষুণ্ন রেখে কিছু অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে। তবে ম্যুরালটি স্বাধীন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস প্রতিফলিত করে না। স্বৈরাচারের সকল চিহ্ন ও ম্যুরাল অপসারণ ছাত্র-জনতার দাবি এবং গণ-আকাঙ্ক্ষা।’