প্রতিবারের মতো এবারও জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করবেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও ঈদের নামাজ আদায় করবেন জাতীয় ঈদগাহে।
ফলে বরাবরের মতো এবারও জাতীয় ঈদগাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি, নামাজ পড়তে আসা মুসল্লিদের জন্য কিছু নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
রোববার (৩০ মার্চ) সকালে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজকে কেন্দ্র করে নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। এখানে একসঙ্গে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের নামাজ আদায় করবেন।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাতে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, প্রবেশ গেটগুলোতে তল্লাশির জন্য আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টর থাকবে। পুরো ঈদগাহ ময়দান এবং আশপাশের এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে। ইতোমধ্যে প্রায় ১০০টি সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে, যা কন্ট্রোল রুম থেকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হবে।
ঈদগাহে প্রবেশের প্রধান তিনটি রাস্তা—মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব ও শিক্ষা ভবনের প্রবেশমুখে আর্চওয়ে ও মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি চালানো হবে। নারীদের জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থা, প্রবেশ গেট এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানান, ঈদগাহ ময়দান ও আশপাশের এলাকা বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনীর সুইপিং টিম ও সিটিটিসির ডগ স্কোয়াড দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা হবে। সোয়াত ও বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটও প্রস্তুত থাকবে। সাদা পোশাকে ডিবি ও সিটিটিসির সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। এছাড়া, ওয়াচ টাওয়ার থেকে পুরো এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
ডিএমপি কমিশনার নগরবাসীর প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে তল্লাশি কাজে সহায়তা করুন। কোনো ধরনের ব্যাগ, ধারালো বস্তু বা দাহ্য পদার্থ নিয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করা যাবে না। নামাজ শেষে সবাইকে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বের হওয়ার অনুরোধ জানান তিনি। সন্দেহজনক কিছু দেখলে নিকটস্থ পুলিশ সদস্যকে জানানোর পরামর্শ দেন এবং জরুরি প্রয়োজনে ৯৯৯ বা পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান।
একই দিন জাতীয় ঈদগাহ পরিদর্শন শেষে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, জাতীয় ঈদগাহে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাতে অংশ নেন। এখানে অনেক গুণীজন ও গণ্যমান্য ব্যক্তি আসেন। তাদের নিরাপত্তার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মুসল্লিদের সুবিধার জন্য ওজু ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা রয়েছে। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য চিকিৎসকও উপস্থিত থাকবেন। এখানে নামাজের জন্য আলাদা জায়নামাজ আনার প্রয়োজন নেই, সবার জন্য কার্পেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।