আগামী ৯ এপ্রিল থেকে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালু হবে। এবং তিন মাসের মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে সবার জন্য উন্মুক্ত হবে এই সেবা। ফলে একদিকে যেমন উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিসেবা পাওয়া যাবে, তেমনি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতেও উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা পৌঁছানো সম্ভব হবে, এমনটিই প্রত্যাশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্টারলিংক একটি লো-অরবিট স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট পরিসেবা। যা পৃথিবীর কক্ষপথে থাকা হাজারো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ দিয়ে থাকে। সরাসরি স্যাটেলাইট থেকে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার কারণে দুর্গম পাহাড়ি এলাকা, দ্বীপাঞ্চল এবং প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সরবরাহ করা সম্ভব হয়।
বাংলাদেশের মতো জনবহুল এবং ভৌগোলিকভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশে স্টারলিংকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। বিশেষ করে দেশের চর, পাহাড় এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দিতে সহায়তা করতে পারে স্টারলিংক।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রচেষ্টায় উচ্চগতির নিরবচ্ছিন্ন এই ইন্টারনেট সেবা পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে এটি ব্যয়বহুল কি না সে বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্টারলিংকের মূল্য বেশ ব্যয়বহুল। স্টারলিংক সংযোগ নিতে হলে ব্যবহারকারীদের প্রথমে একটি কিট কিনতে হয়, যার মধ্যে রয়েছে স্যাটেলাইট ডিশ, রাউটার এবং অন্যান্য যন্ত্রাংশ।
স্টারলিংকের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, স্টারলিংক কিটে একটি রিসিভার বা অ্যান্টেনা, কিকস্ট্যান্ড, রাউটার, ক্যাবল এবং পাওয়ার সাপ্লাই থাকে। এই কিটের দাম ৩৪৯ থেকে ৫৯৯ মার্কিন ডলারের মধ্যে। বাংলাদেশে এর সম্ভাব্য দাম ৬০-৭০ হাজার টাকা হতে পারে। এরপর প্রতিমাসে সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে, যা ১২-১৭ হাজার টাকা হতে পারে।
স্টারলিংক সংযোগ পেতে হলে, গ্রাহকদের প্রথমে স্টারলিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (starlink.com) গিয়ে আগ্রহী গ্রাহক হিসেবে নিবন্ধন করতে হবে। এরপর সংযোগ পাওয়া যায় কি না, তা পরীক্ষা করতে ঠিকানা দিয়ে পরীক্ষা করতে হবে। প্রি-অর্ডার কনফার্ম করতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হতে পারে। ডেলিভারির পর, স্টারলিংক কিট (স্যাটেলাইট ডিশ ও রাউটার) সেটআপ করতে হবে। এরপর স্টারলিংক অ্যাপের মাধ্যমে সংযোগ সক্রিয় করতে হবে। এটি একটি সম্ভাব্য প্রক্রিয়া।
বাংলাদেশে স্টারলিংকের আনুষ্ঠানিক পরীক্ষার আগেই গত ২৫ মার্চ ঢাকার এক হোটেলে স্টারলিংক ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা করা হয়েছে। পরীক্ষায় ডাউনলোড স্পিড ২৩০ এমবিপিএস এবং আপলোড স্পিড ২০ এমবিপিএস পাওয়া গেছে। এছাড়া, ২৬ মার্চও একটি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হয়েছে যেখানে ৩০১.৮৭ এমবিপিএস ডাউনলোড স্পিড এবং ২৫.৮৮ এমবিপিএস আপলোড স্পিড পাওয়া গেছে।
এই পরীক্ষার ফলাফল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম।
আপনার মতামত লিখুন :