রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ‘বি’ ইউনিট তথা ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ভর্তি পরীক্ষায় ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলে’ ‘সি’ ইউনিট তথা বিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান এবং ভূ-বিজ্ঞান অনুষদের উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) দেওয়া হয়েছে। এতে, বিজ্ঞান অনুষদের উত্তরপত্র দেখে বিড়ম্বনার শিকার হয়েছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ্ অ্যাকাডেমিক কলা ভবনের ২০১, ২০৩ ও ২০৪ নম্বর কক্ষে এসব ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অ্যাকাডেমিক ভবন ও স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু বিজ্ঞান ভবনেও এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, উত্তরপত্রের প্যাকেজিংয়ের সময় অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলে বিজ্ঞান ইউনিটের উত্তরপত্র ‘বি’ ইউনিটের প্যাকেটে চলে এসেছে। এই অভিযোগ পাওয়ার পরে দ্রুততম সময়ের মধ্যে পরীক্ষার্থীদের সঠিক উত্তরপত্র (ওএমআর) দেওয়া হয়েছে। এতে শিক্ষার্থীদের সাময়িক বিড়ম্বনা হলেও তাদের পরীক্ষা ঠিক সময়েই শুরু করা সম্ভব হয়েছিল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই প্রথম পাঁচটি আঞ্চলিক কেন্দ্রে ভর্তি পরীক্ষা নিচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার (১২ এপ্রিল) বেলা ১১টায় শুরু হয় `বি` ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবনের কয়েকটি কেন্দ্রে ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় `সি` ইউনিটের উত্তরপত্র বিতরণ করা হয়। ভুল উত্তরপত্র নজরে পড়লে হতভম্ব হয়ে পড়েন শিক্ষার্থী ও দায়িত্বরত শিক্ষকেরা।
পরে কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের আন্তরিকতায় ওএমআর শিট পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা হয়। ১১টার আগেই শিক্ষার্থীদের মাঝে উত্তরপত্র বিতরণ করার নিয়ম থাকলেও ওএমআর শিটে ঝামেলা থাকায় পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৫ মিনিট আগে উত্তরপত্র পান শিক্ষার্থীরা।
ওএমআর শিটে নিজেদের রোল নম্বর, সেট কোড ভরাট এবং নিজেদের নাম-ঠিকানা লিখতে গিয়ে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করতে হয়েছে তাদের।
পরীক্ষা শেষে হল থেকে বেরিয়ে জাহিদ নামে এক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী জানান, আমরা পরীক্ষার অন্তত আধাঘণ্টা আগেই হলে উপস্থিত হয়েছিলাম। কিন্তু ওএমআর শিট দেওয়ার পর দেখি সেখানে ‘বি’ ইউনিটের পরিবর্তে ‘সি’ ইউনিট লেখা রয়েছে।
বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে কক্ষ পরিদর্শককে জানালে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেন। তবে ততক্ষণে অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে।
পরীক্ষার একেবারে শুরু হওয়ার ঠিক আগে আগে আমাদের নতুন শিট দেওয়া হয় এবং আমরা তাড়াহুড়ো করে তা পূরণ করি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এস এম এম কামরুজ্জামান বলেন, "‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবেই সম্পন্ন হয়েছে।
শহিদুল্লাহ একাডেমিক ভবনের কয়েকটি কক্ষে ভুলক্রমে ‘সি’ ইউনিটের ওএমআর দেওয়া হয়েছিল। ওএমআর এর ওই প্যাকেটির ওপরের লেবেলে বি ইউনিটের সিল থাকলে ভেতরে সি ইউটিটের ছিল। ফলে, এই ভুলটা ওএমআর প্যাকেজিংয়ের সময়েই হয়েছিল।”
তিনি আরও বলেন, `যদিও আমাদের এই ভুল ডিনস কমপ্লেক্স এর একদম পাশের ভবনেই হওয়ার ফলে আমরা দ্রুততম সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের `বি` ইউনিটের সঠিক ওএমআর দিতে পেরেছি।
তবে, এতে শিক্ষার্থীদের ভয় বা হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, এই ভুলটা দেশের অন্যান্য অঞ্চলের কেন্দ্রগুলোতে হলে ওইখানকার পরীক্ষার্থীদের বিড়ম্বনা আরও বাড়ত। সেখানে আমাদের নিজস্ব ক্যাম্পাসের কেন্দ্রে হওয়ার ফলে দ্রুত সমাধান করা হয়েছিল।`
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, ‘ভর্তি পরীক্ষায় এ ধরনের ভুল করা একদমই অনুচিত।
অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যেহেতু ভুলটা হয়ে গেছে আমরা চিন্তা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সভা করে আগামী পরীক্ষাগুলোতে এ ধরনের সমস্যা এড়ানোর বিষয়ে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত গ্রহন করবে।’
আপনার মতামত লিখুন :