রবিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৫

ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সম্মিলিত সচেতনতার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০৯:৩৮ পিএম

ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সম্মিলিত সচেতনতার আহ্বান

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ভূমিকম্পের ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে—এ বাস্তবতা সামনে এনে সম্মিলিত সচেতনতা ও প্রস্তুতির আহ্বান জানিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘মুভমেন্ট ফর নেচার’।

শনিবার (১২ এপ্রিল) পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, ভূমিকম্প প্রতিরোধ সম্ভব না হলেও সচেতনতা ও পূর্বপ্রস্তুতির মাধ্যমে এর ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব।

সংগঠনটি জানায়, বাংলাদেশ তিনটি সক্রিয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চল ভূমিকম্পের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। রাজধানী ঢাকা রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে। জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার তথ্য অনুযায়ী, একটি বড় ধরনের ভূমিকম্পে দেশে প্রায় ৬ কোটি ১২ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। শুধু ঢাকাতেই ৭ মাত্রার বেশি ভূমিকম্প হলে ৭২ হাজার ভবন ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সংগঠনের আহ্বায়ক এম আর লিটন, যুগ্ম আহ্বায়ক মামুন আকন্দ, মো. মানিক, সদস্য সচিব মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মো. সজিব উদ্দীন, শুভ চন্দ্র শীল ও কানিজ ফাতিমা যৌথ বিবৃতিতে ভূমিকম্প বিষয়ে জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর জোর দেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার জন্য এখনই প্রয়োজন বাস্তব পদক্ষেপ। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি প্রতিটি নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে।’

সংগঠনটি চারটি মূল করণীয় তুলে ধরে: ১. জনসচেতনতা বৃদ্ধি: স্কুল, কলেজ, মসজিদ, অফিস এবং পাড়া-মহল্লায় ভূমিকম্পকালীন করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়। এ জন্য নিয়মিত মহড়া আয়োজনের তাগিদ দেওয়া হয়, যাতে জরুরি পরিস্থিতিতে জনগণ সঠিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।

২. নিরাপদ ভবন নির্মাণ: নির্মাণ বিধিমালা কঠোরভাবে অনুসরণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করে সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের সুপারিশ করা হয়।

৩. জরুরি সেবা প্রস্তুতি: ভূমিকম্পের পর উদ্ধার, চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তা দ্রুত নিশ্চিত করতে প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতালসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

৪. আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার: ভূমিকম্প পূর্বাভাস ও ঝুঁকি নিরূপণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘ভূমিকম্পের ঝুঁকি মোকাবিলায় সম্মিলিত উদ্যোগই আমাদের সবচেয়ে বড় শক্তি। প্রতিটি নাগরিককে ব্যক্তি, পরিবার ও সামাজিক পর্যায়ে প্রস্তুতি নিতে হবে। সচেতন না হলে যে কোনো সময় বড় বিপর্যয় নেমে আসতে পারে।’

বিজ্ঞপ্তিতে শেষ পর্যন্ত সংযোজন করা হয়, ‘ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ থেকে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হলে এখনই প্রয়োজন সম্মিলিত সচেতনতা, পরিকল্পিত প্রস্তুতি এবং বাস্তবমুখী পদক্ষেপ।’

আরবি/একে

Link copied!