বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি না পাওয়ায় এবার কলকাতার পহেলা বৈশাখের আয়োজনে নেই বহুল আকাঙ্ক্ষিত ‘পদ্মার ইলিশ’। প্রতিবছরই বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে সীমিত পরিমাণে হলেও পশ্চিমবঙ্গে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে থাকে বাংলাদেশ সরকার। তবে চলতি বছর এখনো পর্যন্ত কোনো অনুমতি না আসায় কলকাতাসহ পশ্চিমবঙ্গের বাজারগুলোতে দেখা মেলেনি পদ্মার ইলিশের।
এদিকে, পশ্চিমবঙ্গের সংবাদমাধ্যমগুলোতে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশের ইলিশ না পাওয়া নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা তুঙ্গে।
অনেকেই দাবি করেছেন, পদ্মার ইলিশ ছাড়া পয়লা বৈশাখের আনন্দ যেন অসম্পূর্ণ। তবে ভারতের স্থানীয় ইলিশ দিয়েই উৎসব পালন করতে হচ্ছে সেখানকার মানুষদের।
বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত কিংবা নিম্নবিত্তের পাতে পান্তা জুটলেও এখন ইলিশের দেখা মেলা ভার। উৎসব-পার্বণে ইলিশের দাম স্বাভাবিকের তুলনায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। এবারও ব্যতিক্রম হয়নি।
বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানি সাধারণত দুর্গাপূজার সময় বেশি হয়ে থাকে। তাই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পূজার সময় সীমিত পরিসরে হলেও রপ্তানির অনুমতি মিলতে পারে।
এদিকে, এ বছর পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। গত ৭ এপ্রিল সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন তিনি এই আহ্বান জানান। তিনি চৈত্রসংক্রান্তি পালনের সঙ্গে পহেলা বৈশাখে বাতাসা, দই, চিড়া, মিষ্টি, ছাতুর শরবত, ভাত, শাক, সবজি ইত্যাদি খাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘মানুষ পহেলা বৈশাখে ইলিশ খায় কেমন করে। এ সময় তো ইলিশ পাওয়ার কথা নয়। পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। এটি আমি পরিষ্কার করতে চাই।’
উল্লেখ্য, দেশের মোট মাছ উৎপাদনের প্রায় ১২ শতাংশ ইলিশ। জিডিপিতে ইলিশের অবদান প্রায় ১ শতাংশ। মৎস্য অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, গত এক দশকে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে। গত ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে প্রতি বছর উৎপাদন হচ্ছে ৫ লাখ টনের বেশি। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ইলিশের উৎপাদন ৫ লাখ ১৭ হাজার টন। ২০১৯-২০ অর্থবছরে উৎপাদন ৫ লাখ ৫০ হাজার টন, ২০২০-২১ অর্থবছরে উৎপাদন ৫ লাখ ৬৫ হাজার টন, ২০২১-২২ অর্থবছরে উৎপাদন ৫ লাখ ৬৭ হাজার টন এবং ২০২২-২৩ অর্থবছরে ইলিশ উৎপাদন ৫ লাখ ৭১ হাজার টন।