টেন্ডারে পাওয়া কাজের টাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার কাছে জিলাপি খেতে চেয়েছেন কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেন। এ-সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে।
ওই কথোপকথনে ওসি মনোয়ার হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘সেফটি সিকিউরিটি দিলামতো সারা জীবন। তোমরা যে ১৮ লক্ষ টাকার কাজ করে ১০ লক্ষ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকেরে খাওয়ালে না।
খাইয়া যে একটু দোয়া কইরা দেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের। তোমার জায়গায় আমি হইলে সুদের উপরে টাকা আইনা আগে জিলাপি খাওয়াইতাম। দোয়াডা হইলো সবার আগে। পরেতো বিল পামু, তাই না?’
এক পর্যায়ে ওসি আরও বলেন, ‘ঠিক আছে তাহলে, জিলাপির অপেক্ষায় রইলাম নাকি? না না, জিলাপি হইলেই হইবো। এক প্যাঁচ আধা প্যাঁচ (এক পিস আধা পিস) জিলাপি দিলে হইবো। বিভিন্ন পারপাসে হইলে পাবলিক খাইলো আর কী, বোঝ না?
এসময় ভুক্তভোগী ছাত্রনেতা বলেন, ‘বিল-টিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেখবো নে’। তার এ কথার উত্তরে ওসি বলেন, ‘ঠিক আছে’।’
ভুক্তভোগী ছাত্রনেতা (ইটনা উপজেলার সংগঠক) আফজাল হুসাইন শান্ত বলেন, ‘আমি ইটনা উপজেলার বলদা হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪৮০ মিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পাই টেন্ডারের মাধ্যমে। কাজ শেষ হওয়ার পরে থানায় গেলে তিনি (ওসি) জিলাপি খেতে টাকা চাইতেন। তখন রেকর্ড করতে পারিনি।
পরে ওসির সঙ্গে ফোনে আমার কথা হলে তিনি আমার কাছে ফসল রক্ষা বাঁধ করে যে লাভ হয়েছে, সেখান থেকে জিলাপি খেতে চান।’
ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রনেতা বলেন, ‘আমি সরকারি কাজ পেয়েছি টেন্ডারের মাধ্যমে। এখানে ওসি কীভাবে জিলাপি খেতে চাইতে পারে?
আমার কাছে যদি জিলাপি খাইতে চাইতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষ কতটা শান্তিতে আছে বুঝতে পারছেন?’
এ বিষয়ে ইটনা থানার ওসি মনোয়ার হোসেন জানান, তিনিও অডিও রেকর্ডটি শুনেছেন। মজার ছলে ওই ব্যক্তির কাছে জিলাপি খেতে চেয়েছেন।
টাকার পরিমাণের বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি কথা ঘুরিয়ে বলেন, এই কথোপকথনের অডিওটি এডিটিং হতে পারে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ঘটনার তদন্তের দাবি জানাই।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা তদন্ত করবো। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :